বেন স্টোকস ওয়ানডে থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর পর মোটামুটি নড়েচড়েই বসেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ইংল্যান্ডের এই টেস্ট অধিনায়ক জানিয়েছেন, তিন সংস্করণেই ‘খেলা চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না।’
স্টোকসের কথায় সায় দিয়ে ক্রিকেটে ঠাসা সূচির সমালোচনা করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন।
ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে আজ অবসরের সিদ্ধান্ত জানান ৩১ বছর বয়সী স্টোকস। বলেছেন, আগামীকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেটাই এ সংস্করণে তাঁর শেষ ম্যাচ।
সংবাদমাধ্যম স্কাই স্পোর্টস এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল নাসের হুসেইনের কাছে। ইংল্যান্ডের সাবেক এই ওপেনার ধুয়ে দিয়েছেন ঠাসা আন্তর্জাতিক সূচিকে, ‘খবরটা বিস্ময় হয়েই এসেছে। সমস্যাটা ইসিবি, রব কি কিংবা বেন স্টোকসকে নিয়ে নয়। সমস্যাটা সূচিতে। আইসিসি যদি নিজেদের ইভেন্টগুলো চালিয়ে যায় আর বোর্ডগুলো যতটা সম্ভব ক্রিকেট দিয়ে ফাঁকা সূচিগুলো ভরাট করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটাররা একটা সময়ে গিয়ে বলবে, “আর পারছি না।”’
নাসের হুসেইন আরও বলেছেন, ‘বেন স্টোকস ৩১ বছর বয়সে এক সংস্করণকে বিদায় বলে দিল, যেটা বাস্তবিক অর্থে ঠিক হলো না। সূচিগুলো নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। এটা এখন কৌতুকে পরিণত হয়েছে।’ স্টোকসের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা সময় ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল। অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি সুপার ওভারে টেনে নিয়ে যান স্টোকস। সুপার ওভারেও ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ইংল্যান্ডের এই প্রিমিয়ার অলরাউন্ডার।
সেই বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এই তিন বছরে ওয়ানডেতে মাত্র ৯ ম্যাচ খেলেছেন স্টোকস। চোট, ঠাসা সূচির চাপ ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেননি এই পেস অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের আরেক সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার মাইকেল আথারটন স্টোকসের ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়ে কলাম লিখেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসে।
আথারটন সেখানে বুঝিয়েছেন, স্টোকসের ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানোটা ক্রিকেট যাঁরা চালান, তাঁদের প্রতি একরকম সতর্কবার্তা। অতিরিক্ত খেলার চাপে ক্রিকেটাররা ভেঙে পড়তে পারেন—সেই সতর্কবার্তা। তবে এই সতর্কবার্তা ঠিক কতটা মনোযোগ কাড়বে ক্রিকেটের বড়কর্তাদের, তা নিয়ে সন্দেহ আছে আথারটনের।
আথারটন আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন কলামে। ঠাসা সূচিতে তিন সংস্করণে খেলা বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটারের ফর্ম পড়ে গেছে। বিরাট কোহলি ২০১৯ সালের পর থেকে শতক পাচ্ছেন না। আইপিএল ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের কেইন উইলিয়ামসনের ফর্মও পড়তির দিকে। এসব দেখেই সম্ভবত নিজের বিষয়ে ভেবেছেন স্টোকস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে স্টোকস ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানোর পোস্ট দেওয়ার পর সেখানে মন্তব্য করেছেন ভারতের তারকা কোহলি, ‘আমার বিপক্ষে খেলা সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটার তুমি।’
ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের মন্তব্য, ‘মঙ্গলবারটা উপভোগ করো।’ ভারতের সাবেক স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা স্টোকসের অবসর নেওয়া প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন।
তিনি মনে করেন, স্টোকসের মতো বড় মাপের তারকারা যদি ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়ে নেন, তাহলে এই সংস্করণের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, ‘আমরা টেস্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু ওয়ানডের ভবিষ্যৎ মনে হচ্ছে অনিশ্চিত। সামনে আরও অনেকেই এই সংস্করণ থেকে সরে যেতে পারে।
এ জাতীয় আরো খবর..