বাজারে নগদ ডলারের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা বা অন্য কাজে ব্যাংকে নগদ ডলার পাওয়াই যাচ্ছে না। ফলে এর দামও বাড়ছে হু হু করে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিভিন্ন ব্যাংকে নগদ ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা দরে। খোলাবাজারে নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯৯ থেকে ১০০ টাকা দরে।
এক মাস আগেও নগদ ডলারের দাম বেড়ে ব্যাংকে ৯৮ টাকা উঠেছিল। খোলাবাজারে উঠেছিল ১০৪ টাকায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করায় ব্যাংকে নগদ ডলারের দাম ৯৪ টাকায় নেমে এসেছিল। খোলাবাজারেও এর দাম ৯৭ টাকায় নেমেছিল। কিন্তু গত ৩-৪ দিন ধরে নগদ ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে নগদ ডলারের বেশি চাহিদা থাকার কথা নয়। হজের সময় চাহিদা বাড়ে। কিন্তু হাজিরা ইতোমধ্যে সবাই চলে গেছেন। ফলে তাদের জন্য বাড়তি ডলারের প্রয়োজন নেই। ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করায় এ খাতেও নগদ ডলারের চাহিদা কম। সরকারি খাতে তো একেবারেই চাহিদা নেই। তবে ছুটির সময় ভারতে চিকিৎসা নিতে অনেকে যান। তাদের জন্য কিছু নগদ ডলারের চাহিদা রয়েছে। এর বাইরে বেশ কিছু ডলার পাচার হচ্ছে। এ কারণে নগদ ডলারের চাহিদা বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংকগুলো নগদ ডলার কিনছে ৯৪ থেকে ৯৬ টাকা দরে। বিক্রি করছে ৯৫ থেকে ৯৭ টাকা দরে। কোনো কোনো ব্যাংক বিক্রি করছে ৯৮ টাকা দরে। তবে নগদ ডলার ক্রয় বিক্রয় দরের মধ্যকার ব্যবধান এক টাকার মধ্যে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এই ব্যবধান এক টাকার মধ্যে থাকলেও খোলাবাজারে তা নেই। খোলাবাজারে প্রতি ডলার কেনা হচ্ছে ৯৬ থেকে ৯৭ টাকা করে। বিক্রি হচ্ছে ৯৯ থেকে ১০০ টাকা করে।
এদিকে ব্যাংকগুলো আমদানির দেনা পরিশোধের জন্য আগাম ডলার বিক্রির দামও বাড়িয়েছে। এক মাস মেয়াদি আগাম ডলার ৯৫ টাকা তিন মাস মেয়াদি আগাম ডলার ৯৬ টাকা ও ছয় মাস মেয়াদি আগাম ডলার ৯৮ টাকা দরে বিক্রি করছে।
ব্যাংকাররা জানান, আগাম ডলার বেচাকেনায় দাম ওই হারে বাড়ার ফলে অনেকেই প্রত্যাশা করছেন আগামী ছয় মাস পরে আমদানির জন্য ডলার কিনতে হবে ৯৮ টাকা করে। এতে বিশেষ করে রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের কাছে ডলার ধরে রাখার প্রত্যাশা বাড়বে। তারা মনে করতে পারে ডলার ধরে রাখলেই দাম বেশি পাওয়া যাবে। এ কারণে আগাম ডলার বেচাকেনায় দাম বাড়ানোর প্রবণতা হ্রাস করা জরুরি।
তবে বেশির ভাগ ব্যাংকেই নগদ ডলার ৯৬ থেকে ৯৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানির জন্য প্রতি ডলার সব ব্যাংকেই ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ঈদের ছুটির সময় বিশ্বের ব্যাংকিং খাত খোলা। ওই সময়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক দেনা পরিশোধ করার শিডিউল রয়েছে। এ কারণে ছুটির দিনেও সাময়িক সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিলিং রুম (যে রুমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করা হয়) সাময়িক সময়ের জন্য খোলা থাকবে।
এ জাতীয় আরো খবর..