ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী কোনো ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়; টালবাহানার মধ্যে আর কোনো ফাঁদে পা দেব না। দেশের গণতান্ত্রিক অন্যান্য রাজনৈতিক দলও প্রহসনের কোনো নির্র্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
আজ বুধবার (৬ জুলাই) জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’র (জেডআরএফ) উদ্যোগে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা সুখারী ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপস্থিত বানভাসি মানুষদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের বুঝতে হবে আমরা গত ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা নানান নির্যাতনের শিকার। আপনার এলাকার সন্তান সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর গত ১৪ বছর ধরে কারাগারে। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা। সরকার আমাদের নিঃস করে দিয়েছে। তারপরও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আপনাদের প্রিয় নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী বা গৃহবন্দী। আর আপনারা হলেন পানিবন্দী। সুতরাং দেশের নেত্রী যখন গৃহবন্দী থাকে, তখন পানিবন্দী মানুষের অসহায়ত্ব দেখার নেতা থাকে না।
ভারতের ভুপেন হাজিরিকার গাওয়া গানের একটি লাইন উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। আওয়ামী লীগ কিন্তু মানুষের জন্য না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে লুটপাটকারী, চোরাকারবারী, অর্থ পাচারকারী খুন, নারী ও শিশু ধর্ষণকারী, মুদ্রা ও নারী পাচারকারীদের জন্য। আর বিএনপি হচ্ছে মানুষের জন্য। এ কারণেই বিএনপি মানুষের পাশে আছে, থাকবে।
নেত্রীকোনাবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থণা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা আরো শক্তি সামর্থ্য নিয়ে আপনাদের পাশে যেন থাকতে পারি। এবং আপনার আমার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই লুটপাটকারী সরকারকে যেন বিদায় দিতে পারি।
এই মুহুর্তে দেশের ২০ শতাংশ এলাকা বন্যাকবলিত উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, সব কিছু মিলিয়ে ২০ শতাংশ মানুষ বন্যার দুর্ভোগে রয়েছে। কিন্তু দেশের ১৮ কোটি মানুষ শেখ হাসিনা সরকারের কারণে দুর্ভোগে আছে। এ থেকে আপনাদের মুক্তি পেতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আপনাদের ভোটের অধিকার আদায় করতে হবে। আপনার ভোট আপনি দিবেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে যাকে খুশি তাকে দিবেন। আমাদের আন্দোলন আপনাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। যেদিন আপনাদের নিরাপদ ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব, সেদিনই আমরা নির্বাচনে যাব।
নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, যে দেশে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ে, সেদেশে সব কিছুর দাম বাড়বে। কারণ, এর সাথে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একটাই উপায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি। আপনাদের শক্তি আমাদের দলের শক্তি ও দেশের শক্তি। আপনাদের শক্তি ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকারকে বিতাড়িত করব। এবং দেশ, দেশের জনগণ এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করব।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন জেডআরএফ’র মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ওয়ারেস আলী মামুন, জেলার ডা. আনোয়ারুল হক ও রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এ জাতীয় আরো খবর..