চলতি বছরের জুন মাসে সারা দেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২৪ জন নিহত হয়েছে। এতে আরো অন্তত ৮২১ জন আহত হয়েছে বলে সোমবার জুন মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতের মধ্যে নারী ৬৮ নারী, ৭৩ শিশু ও ৭৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি মারা গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। ১৯৭টি দুর্ঘটনায় ২০৪ জন নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী নিহত হয়েছে। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮৬ জন। জুনে আটটি নৌ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছে এবং তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৭৪টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ছয়টি সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১০৩টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯৮টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৩৮টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৯টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে, ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে, ২৯টি দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত। সবচেয়ে কম রাঙামাটি, মাগুরা, লালমনিরহাট ও সুনামগঞ্জ জেলায়। এই চারটি জেলায় ৯টি সাধারণ মাত্রার দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ মোট ১০ কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সংস্থাটি ১০টি সুপারিশও দিয়েছে। এতে বলা হচ্ছে, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..