পদ্মা সেতুতে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রবেশ করে ভিডিও ধারণ পরবর্তী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারকারী শিবির কর্মী মাহদী হাসানকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন শিবির কর্মী মাহদী হাসানের বাবা মো. মনির হোসেন।
মাহদী মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের রব-নগরকান্দী গ্রামের মনির কাজীর বড় ছেলে। মনির কাজীর পৈতৃক বাড়ি উপজেলার হাসাইলে-বানারী ইউনিয়নে। আর মাহদীর সহযোগী বায়েজিদ (২৫) উপজেলার মটুকপুর গ্রামের তোবারক পাইকের ছেলে। বায়েজিদ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
গ্রেফতার মাহদী তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করেছেন। তিনি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করাকালে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
মাহদীর পিতা মো. মনির হোসেন বলেন, আমার ছেলের যদি অন্যায় করার চিন্তা থাকত তাহলে সে ভিডিও করত না। তবে সে যেটা করেছে তা অন্যায় করেছে, ভুল করেছে। আমার ছেলে এখন ঢাকার কাজী নজরুল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে মাহদীকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে ২৯ জুন বুধবার দিবাগত রাতে তাকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৩০ জুন দুপুরের পর গ্রেফতারকৃত মাহদীকে নিয়ে আসা হয় মুন্সীগঞ্জে। এরপর তাকে ঢাকায় এনে মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মানিক চন্দ্র দাসের আদালত মাহদীকে জেলহাজতে আটক রাখার আদেশ দেন।
এর আগে ২৬ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়- সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত নাট-বল্টু খুলে সে প্রদর্শন করছে। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে আরও দেখা যায় গ্রেফতার মাহদী সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলছে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে। তারপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। পরে মাহদীর অবস্থান শনাক্তের পর রামগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতু উত্তর থানার মামলায় মাহদীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়- অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কো-অর্ডিনেটর চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি বাদী হয়ে মামলাটি ৩০ জুন ৫টায় থানায় দায়ের করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসাইন মামলাটি গ্রহণ করেন।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহদী পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার ভিডিও মোবাইলে ধারণের পূর্বে গোপনে রেঞ্জ দিয়ে নাট-বল্টু খোলে রাকেন। এ সময় তার সহযোগীরা তাকে সহায়তা করেন। পদ্মা সেতু ভ্রমণের নামে তারা ওই দিন ভোরে সেতু পার হয়ে ফরিদপুর যান। পরে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ফেরার পথে মাওয়াপ্রান্তে এসে নাট-বল্টু খোলেন।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে ফরওয়ার্ড করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরবর্তীতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..