প্রতীক্ষার পালা শেষ হয়েছে। উদ্বোধন হয়ে গেল বহুল প্রতিক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর।
সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সারা দেশে প্রায় সব জেলা থেকে মানুষ এসেছে জমা হয়েছে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরিয়তপুর প্রান্তে।
চারিদিকে ব্যানার, ফেস্টুন আর রাস্তায় মোড়ে বিলবোর্ড গোটা পরিবেশকে উৎসবের আমেজে রূপ দিয়েছে।
এতো সব আয়োজনের প্রধানকেন্দ্র ‘পদ্মাকন্যা’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে সুধী সমাবেশে যোগ দিয়ে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। সে অনুষ্ঠান শেষে টোল দিয়ে সেতু পার হন তিনি। সেতুর ফলক উন্মোচন করেন।
আর প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে ওই এলাকার বাড়ির ছাদেও ভিড় জমান স্থানীয়রা।
যদিও এতো দূর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতু পাড়ি জমানো দেখাটা অস্পষ্টই। সেতু দিয়ে যান চলাচল করা আবছা দেখা যায়।
তবুও আগ্রহের কমতি নেই স্থানীয়দের। যতটুকুর দেখা মেলে ততটাই তৃপ্তি।
এ যেমন জীবন দাসের পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু পাড়ি দেবেন তার সেই দৃশ্যটি দেখবেন না? তা কি হয়!
বাড়ির ছাদে জড়ো হয়েছেন জীবন দাসের পরিবারের সব সদস্য।
পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের মেদিনীমণ্ডলে বাড়ি জীবন দাসের। ৪০ বছর ধরে থাকছেন এখানে। বছর দুয়েক আগে বাড়িকে পাঁচতলা ভবনে উন্নিত করেছেন। বাড়ির ছাদ থেকে পদ্মা সেতুকে দারুণ উপভোগ করা যায়।
সে সুযোগটাই কাজে লাগালেন জীবন দাস। ছেলেমেয়ে, পুত্রবধূ, নাতি-নাতনি সবাইকে নিয়ে উঠলেন বাড়ির ছাদে।
শুধূ কি তাই; আশপাশে থাকা তার আত্মীয়স্বজনদেরও ডেকে এনেছেন তার বাড়িতে।
জীবন জানালেন, ‘বাড়ির ছাদ থেকে পদ্মা সেতু দেখা যায়- এটা সবাই জানে। প্রধানমন্ত্রী আজকে যাবেন, সেটা দেখার জন্যই তারাও এসেছেন আমাদের বাড়িতে। প্রধানমন্ত্রীর সেতু পাড়ি দেওয়ার দৃশ্যটা দেখা থেকে নিজেদের বঞ্চিত করতে চাই না আমরা। হ্যা, টেলিভিশনে সব দেখা যায়। কিন্তু নিজের বাড়ির ছাদ থেকে এ মাহেন্দ্রক্ষণ দেখার আনন্দটাই আলাদা, সরাসরি নিজ চোখে দেখা অন্য রকম বিষয়।’
জীবন দাসের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাওয়া বাজারে মিষ্টির দোকানি দুলালও সস্ত্রীক যোগ দিয়েছেন ছাদের আয়োজনে।
দুলাল বলেন, ‘আমি এখানে আসছি প্রধানমন্ত্রী আসব। এত্ত বড় একটা প্রোগ্রাম। আমার সঙ্গে বউ পোলারাও আসছে।’
তার স্ত্রী বলেন ‘শেখ হাসিনাকে দেখার জন্যই ছাদে আইসা বসছি। শেখ হাসিনা গাড়ি দিয়ে যাবে ওই পাড়, সেটা দেখব। খুব আনন্দ লাগতেছে, শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে দিছে। আজকে বেশি আনন্দ লাগতেছে। এই আনন্দ আমাদের দুর্গাপূজার চেয়েও বেশি।’
জীবন দাসের মতো আশপাশের বহুতল ভবনের ছাদেও দেখা গেছে অনেককে।
এ জাতীয় আরো খবর..