পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনো খামতি রাখেনি সরকার। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদীতে সেতুটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন প্রকৌশলীরা।
তাতে বেশ কয়েকটি বিশ্বরেকর্ড গড়া হয়ে গেছে।
এ ছাড়া পদ্মা সেতু পারাপারে টোল আদায়েও সর্বোচ্চ মান রাখা হয়েছে। ৬.১৫ কিমি. সেতুর টোল আদায় করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) কার্ড যানবাহনে থাকলে টোল বুথে থাকা ডিভাইসের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট টাকা কেটে নেওয়া হবে।
এ জন্য সেতুর দুই প্রান্তে ১৪টি ইলেকট্রনিকস টোল কালেকশন (ইটিসি) বুথ বসিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোম্পানি।
বলা হচ্ছে, ইটিসি বুথের মাধ্যমে চলমান গাড়ি থেকে মাত্র ৩ সেকেন্ডে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আদায় হবে টোল।
অর্থাৎ পদ্মা সেতু পারাপারে টোল দিতে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে না। হবে না দীর্ঘ লাইন। যাত্রায় সময় সংক্ষিপ্ত হবে।
আপাতত দুটি গেটে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (কারিগরি) কাজী মোহাম্মাদ ফেরদৌস। পরে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজায় সাতটি করে মোট ১৪টি গেট রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে দুই প্রান্তে দুটি গেটে ইলেকট্রনিকস টোল কালেকশন বুথ চালু হবে। যার ভেতর দিয়ে একটি গাড়ি মাত্র তিন সেকেন্ডে পার হতে পারবে। বাকি ১২টি গেট ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। তবে যানবাহনে আরএফআইডি কার্ডের ব্যবহার যত বাড়বে, তত ইটিসি বুথ বাড়ানো হবে।’
এ বিষয়ে সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, ‘সেতু এলাকায় একটি অটোমেটিক টোল সিস্টেম থাকবে। এটি এমন না যে ২৫ তারিখ থেকে এটি চালু হবে। এর জন্য আমাদের কিছুটা সময় লাগবে। যে কোম্পানি কাজ নিয়েছে, তাদের অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে ইটিসি চালু করতে।’
প্রযুক্তির বিষয়টি স্পষ্ট করতে মনজুর হোসেন বলেন, ‘সিস্টেমটা থাকবে এমন যে, কারও কাছে নির্দিষ্ট কার্ড থাকলে তার গাড়ি আনইন্টারাপ্টেড ক্রস করবে। এর মানে গাড়ি থামাতে হবে না। কার্ড থেকে টাকা কেটে নেবে, যেটি ইটিসি (ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন) বলে। টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। বার উঠে যাবে। কারও কাছে কার্ড না থাকলে সে ক্যাশ দিয়ে অথবা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেও পার হতে পারবে। প্রতিটা সিস্টেমে একটা ডেডিকেটেড ইটিসি প্রথমে থাকবে, আস্তে আস্তে আমরা পুরোটাই ইটিসিতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করব।’
পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়েছে কোরিয়া এবং চীনের দুটি কোম্পানি। তারা যৌথভাবে পাঁচ বছরের জন্য এ দায়িত্ব পালন করবে। এ জন্য বাংলাদেশের খরচ করতে হবে ৬৯২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
কোম্পানি দুটি হচ্ছে— কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) এবং চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)।
এ জাতীয় আরো খবর..