২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি আরো জানান, সরকার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন কবের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
লিখিত জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, ২০০৯ সালের শুরুতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ সংসদে জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৮ হাজার ৩০০ সার্কিট কিলোমিটার। একই সময়ে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ৬ লাখ ১০ হাজারে উন্নীত হবে।
একই দলের মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ এ খাতের সার্বিক ও সুষম উন্নয়নের তাৎক্ষণিক, স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ২০০৯ সালের পূর্বে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধাভুক্ত মানুষ ছিল মাত্র ৪৭ শতাংশ।
তিনি আরো জানান, সরকারের পরিকল্পনাসমূহ নিবিড় তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়নের ফলে বিদ্যুৎ খাতে বিগত ১৩ বছরে অবশিষ্ট ৫৩ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার ফলে বর্তমানে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু দুর্গম এলাকা ব্যতীত দেশের সকল উপেজলায় শতভাগ বিদ্যুৎতায়ন সম্প্রসারণ করা সম্ভব হয়েছে।
দেশে ৯ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী মোট প্রাথমিক গ্যাস মজুদের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য (২পি) মজুদের পরিমাণ ২৮ দশমিক ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ১৯ দশমিক ১১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করায় প্রায় ৯ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে।
বর্তমানে দেশের ৩০টি জেলায় বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহকের (বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প, সার কারখানা, সিএনজি, গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক ও চা বাগান) নিকট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, মজুদকৃত দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের সাথে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি আছে, যা সমন্বযয়ের লক্ষ্যে বর্তমানে এলএনজি আমদানিসহ দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রসমূহের উৎপাদন বাড়ানো এবং নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার (অনশোর ও অফশোর) জন্য নানামুখী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
সরকারী দলের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, পেট্রোবাংলা কর্তৃক গৃহীত চলমান ৩৪টি প্রকল্পে মোট বিনিয়োগ ১৪ হাজার কোটি ৪৬ লাখ টাকা। তম্মধ্যে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ৩হাজার ৮১ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং দেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ১০ হাজার ৯শত ১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তিনি জানান, পেট্রোবাংলার ডিপিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন ৯টি প্রকল্পে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ হাজর ৪ শত ৩৪ কোটি ৭৩ লক্ষ ৯৮ হাজার লাখ টাকা। তন্মেধ্যে, বিদেশী বিনিয়োগ নেই, সবটাই বিনিয়োগ।
এ জাতীয় আরো খবর..