প্রস্তাবিত বাজেট অর্থ পাচারকারী ও লুটেরাদের বাজেট বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাজেটে সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের লুটপাটের জন্য সব সুযোগ রাখা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের দুদিন পর আজ শনিবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাজেট কোনো অর্থেই সাধারণ মানুষের বাজেট নয়।
এটি ডলার পাচারকারী ও অর্থ লুটেরাদের বাজেট। এবারের বাজেট বর্তমান কঠির সময়ের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বাস্তবতা বর্জিত।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, পাচারকারীদের অর্থ নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা কিংবা তা বৈধতা দিতে বাজেট সুযোগ রাখা হয়েছে। অথচ সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহৃত চাল, ডাল, লবণ, চিনি, গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির মূল্য হ্রাসের কোনো কার্যকরী কৌশল নেওয়া হয়নি।
পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরাতে ‘কর ছাড়’ এর প্রস্তাবকে আইনের পরিপন্থী অভিহিত করে তিনি বলেন, এই প্রস্তাব কেবল অনৈতিক নয়, এটা রীতিমতো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে ক্ষমা ঘোষণার শামিল। এতে বর্তমানে চলমান অর্থ পাচারের মামলাগুলোর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অর্থ পাচারকারীরা আরো উৎসাহিত হবে, টাকা আরো পাচার হওয়ার প্রবণতা তৈরি হবে। এটা অন্যায়, অপরিণামদর্শী ও আত্মঘাতী পদক্ষেপ।
বিএনপি মুখপাত্র আরো বলেন, গত ১৪ বছরে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজনই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। এখন এই ঘোষণার মাধ্যমে সরকার সেসব পাচারকারীদের অবৈধ অর্থ বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দিল যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক যেকোনো মানদণ্ডে অগ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে ‘অবিলম্বে পাচারকারীদের চিহ্নিত করে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং পাচারকারীদের অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
প্রস্তাবিত বাজেটের নানা দিকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই বাজেট হচ্ছে অব দ্যা বিজনেস ম্যান, বাই দ্যা বিজসেন ম্যান এবং ফর দ্যা বিজনেস ম্যান। মূল্যস্ফীতিতে জনমানুষের যখন নাভিশ্বাস, তাদেরকে স্বস্তি দেওয়ার কোনো নেই। করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি, স্বস্তি পায়নি মধ্যবিত্তরা। বাজেটে যেসব পণ্যের আমদানি কর বাড়ানো হয়েছে সেগুলোর ভোক্তা মূলত মধ্যবিত্তরা।
ডিজিটাল মুদ্রা চালুর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটি একান্তই বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির বিষয়। অর্থমন্ত্রী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখতিয়ারে হাত দিতে পারেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
এ জাতীয় আরো খবর..