দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'কয়েক বছর ধরে দেখছি যারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করেন তাদের বাসা-বাড়ির ওপর হামলা হচ্ছে। সরকার সেগুলো রক্ষা করতে পারেনি। '
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এ ছাড়া সদ্য পরোলোকগত হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয় সভায়।
তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর যে রিপোর্ট হয় সেই রিপোর্টে তারা পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য। তবে বিএনপি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বলে কিছু আছে তা বিশ্বাস করে না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সবাই একই সম্প্রদায়ের মানুষ। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেটাতেই বিশ্বাস করেন। '
তিনি বলেন, 'আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার শান্তির জন্য এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা আজকে তাকে স্মরণ করব। বারবার তার কথা মনে করব। বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্রহীনতা চলছে সেই গণতন্ত্রহীনতা দূর করে আমরা যেন মানুষের অধিকারকে উদ্ধার করতে পারি। আমরা যেন ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি। আমরা যেন এই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমরা যেন এই দেশের সাম্প্রদায়িকতার সব বীজ উপড়ে ফেলতে পারি। সে জন্য আজকে সবাইকে দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম-লড়াই করতে হবে। '
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করা হয়েছিল। পরে গৃহে অন্তরীণ করা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। '
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্রহীনতা চলছে সেই গণতন্ত্রহীনতাকে দূর করে আমরা যেন মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি। মানুষের অধিকারগুলো রক্ষা করতে পারি, আমরা যেন এই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। প্রার্থনা করব আমাদের দেশে যেন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়। সত্য ও সুন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়, সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। '
দলের সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেশ দাস অপুর সভাপতিত্বে ও যুবদল নেতা তরুণ দের সঞ্চালনায় এই প্রার্থনাসভার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী।
প্রার্থনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কুমার সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সুশীল বড়ুয়া, অর্পণা রায়, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ মধু, মিল্টন বৌদ্ধ, জয়দেব, সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম, মোশাররফ হোসেন খোকন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
এ জাতীয় আরো খবর..