×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৬
  • ৭৩ বার পঠিত
জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোড শেডিংসহ বেশ কিছু উদ্যোগ চলমান। তবে কিছু জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব অঞ্চলের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি  শিল্পের (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তারা। দেশের বৃহৎ শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ জেনারেটরভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং তেলচালিত জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকায় লোড শেডিংয়ে পণ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়ছে না।

যদিও উৎপাদন খরচ কিছুটা বাড়ছে। তবে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে তাঁদের উৎপাদন।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। যশোর নকশি কাঁথা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মরিয়ম নার্গিস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ কাজ বৈদ্যুতিক স্বয়ংক্রিয় মেশিনে করতে হয়। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাপকভাবে ব্যাঘাত ঘটছে। প্রথমে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল অফিস টাইম আট ঘণ্টার মধ্যে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এই সময়ের মধ্যে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ’ তিনি বলেন, ‘অফিস সময়ে লোড শেডিং না দিয়ে রাতের বেলা দেওয়া হলে আমরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাব। ’

জানতে চাইলে বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তা সমিতির রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও লিনা ফ্যাশন হাউসের উদ্যোক্তা আঞ্জুমান আরা পারভিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাজশাহীতে আমার এলাকায় দিনের বেলায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। ঠিকমতো কারখানা চালাতে না পারায় কর্মীদের বেতন ও ব্যাংকঋণ পরিশোধে সমস্যায় পড়ছি। ’

বাল্ব, সুইচ, কেবলসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদনে কাজ করছেন মুন্সীগঞ্জের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা নাজমুল ইসলাম। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম এসকেআরপি। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার কারখানা খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এই ৯ ঘণ্টার মধ্যে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। কারখানায় উৎপাদন ঠিক রাখতে জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। এতে আমাদের উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব সরাসরি ভোক্তার ওপর পড়বে। কারণ পণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়লে পণ্যের দাম বাড়বেই। ’

ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে খামারেই মারা যাচ্ছে মুরগি। এতে ক্ষতির মুখে পোলট্রি খামারিরা। জানতে চাইলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পোলট্রি মালিক সমিতির সভাপতি এম এ মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক ঘণ্টা পর পর লোড শেডিংয়ে অত্যধিক গরমে ব্রয়লার ও ডিম পাড়া মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ১০ হাজার ডিম পারা মুরগি রয়েছে, তার মধ্যে গত সাত দিনে ৭০০ মুরগি মারা গেছে। এলাকার প্রতিটি খামারেই গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। ’ তিনি বলেন, ‘খামারিদের লোড শেডিংয়ের বাইরে রাখা প্রয়োজন। সেটা সম্ভব না হলে খামারগুলোতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টার বেশি লোড শেডিং না দেওয়া। ’

অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোড শেডিংয়ে নিঃসন্দেহে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব লোড শেডিং থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসার পথ বের করতে হবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যাতে তাঁদের কারখানা চালু রাখতে পারে, সে জন্য বিনা সুদে বা স্বল্পসুদে জেনারেটরের ব্যবস্থা করে দেওয়া। ’  

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অবশ্য বলেছেন, ‘এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করে লোড শেডিংয়ের বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat