ঈদুল আজহার ছুটি শেষেও রাজধানীর বাজারগুলোয় সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। ফলে বেড়েছে দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে বেশির ভাগ সবজির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সালাদের উপকরণ শসা, টমেটো, গাজর ও কাঁচা মরিচের দাম।
অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি, চাল, ডাল, ডিম, আদা, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্য নিত্যপণ্যের দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটিতে রাজধানীর বাইরে যাওয়া মানুষের যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সবজিবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে বেশির ভাগ সবজির।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, বাবুবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারওয়ান বাজার কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা রবিউল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খুচরায় প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। পটোল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, করলা, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। এ ছাড়া বরবটি ৬০ থেকে ৭০, চালকুমড়া ৫০, লাউ ৫০ থেকে ৬০, লতি ৬০ এবং কচুমুখী ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ঈদের আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। কারওয়ান বাজারের চিকেন মার্কেটের মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম বাড়েনি, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকায়, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা। ’
সপ্তাহের ব্যবধানে অন্য প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স সিয়াম স্টোরের ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের দামেই সব বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৪০, আদা ১০০, ডাল মোটা ১১০, ডাল (দেশি) ১৪০, মোটা চাল (বি-২৮ ও পায়জম) ৫২ থেকে ৫৩, মিনিকেট ৭০ এবং নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ’
বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সলিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বাড়েনি। মোটা চাল ২৮ ও পায়জম বিক্রি হচ্ছে ৫০ কেজির বস্তা ২৪০০ থেকে ২৪৫০ টাকায়, চিকন চাল মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৩১০০ থেকে ৩২০০ টাকায় আর নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৩২৫০ থেকে ৩৩৫০ টাকায়। ’
পেঁয়াজ আমদানিকারক ও শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মাজেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবার ঈদে পেঁয়াজের বাজার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কারণ প্রতিবার কোরবানির ঈদে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও এবার দাম কমেছে। এখনো সেই কমতি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আজ (গতকাল) পাইকারি পেঁয়াজ কেজি ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন কেজি ৪০ থেকে ৫০, আমদানি রসুন ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং আমদানি করা আদা পাইকারিতে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ জাতীয় আরো খবর..