নীতিমালায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন অনেকাংশে নির্ভর করে ভোটকেন্দ্রের সঠিক স্থান নির্ধারণের ওপর। এজন্য ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত স্থানে এবং ভোটারদের যাতায়াতের সর্বোচ্চ সুবিধা বিবেচনা করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা গেজেটে প্রকাশের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।নীতিমালা অনুযায়ী, গড়ে প্রতি ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। পুরুষ ভোটার প্রতি ৫০০ জন এবং নারী ভোটার প্রতি ৪০০ জনের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি বা প্রাকৃতিক কারণে কোনো কেন্দ্র বিলুপ্ত হলে, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্র নির্ধারণ করতে হবে।
ভোটকেন্দ্র স্থাপনে সরকারি ভবনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি অফিস, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টারসহ উপযুক্ত সরকারি বা আধাসরকারি ভবনে ভোটকেন্দ্র করা যাবে। তবে কোনো প্রার্থীর প্রভাবাধীন স্থান, ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান, হাটবাজার বা সংকীর্ণ গলিতে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, দুর্গম এলাকা, পার্বত্য অঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চলে ভোটারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কম সংখ্যক ভোটার নিয়েও কেন্দ্র স্থাপন করা যাবে। সাধারণভাবে দুটি ভোটকেন্দ্রের দূরত্ব তিন কিলোমিটারের বেশি না রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে নারী ও পুরুষ ভোটারদের সুশৃঙ্খলভাবে ভোটদানের জন্য পৃথক প্রবেশ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নারী ও পুরুষ ভোটারদের জন্য আলাদা আলাদা ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রের তালিকায় সংশ্লিষ্ট ভোটার এলাকার নাম, মোট ভোটার সংখ্যা এবং নারী-পুরুষ ভোটারের সংখ্যা আলাদাভাবে উল্লেখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো ভোটার এলাকা বিভক্ত হলে ভোটার তালিকার ক্রমিক নম্বর স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে, যাতে ভোটাররা বিভ্রান্ত না হন।
নীতিমালায় প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও তৃতীয় লিঙ্গধারী ভোটারদের ভোটদানে বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোনো ভোটকেন্দ্র কোনো প্রার্থীর বাড়ি সংলগ্ন বা নিয়ন্ত্রণাধীন হলে তা জরুরি ভিত্তিতে কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসি জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্রের প্রাথমিক তালিকার ওপর আপত্তি ও সুপারিশ যাচাই করে ভোটগ্রহণের অন্তত ২৫ দিন আগে চূড়ান্ত তালিকা গেজেটে প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ তথ্য নির্ধারিত ছক অনুযায়ী কমিশনে পাঠাতে হবে।