×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-১৩
  • ৪৯ বার পঠিত
টেলিভিশনের আলোচনায় ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জারি করা ‘বিধিনিষেধ’ এর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আদিবাসী হিসেবে সাংবাদিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।  

মানববন্ধনে আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা আসলাম খান বলেন, মধুপুর, শেরপুর, মহাদেবপুর, দিনাজপুর, নওগা, সিরাজগঞ্জসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি আমরা। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি করছি, অবিলম্বের পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করুন।

আসলাম খান বলেন, ‘মধুপুরে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে আাদিবাসীদের উচ্ছেদ করে বন উচ্ছেদ করে ইকোপার্ক ও লেক করবেন। আমরা এই মানববন্ধন থেকে সরকারকে বলতে চাই, আপনারা মধুপুরে ইকোপার্ক ও লেক তৈরির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। যদি আপনার এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করেন তাহলে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন সারাদেশের আদিবাসীদের নিয়ে মধুপুরে আবস্থান কর্মসূচি পালন করবে এবং আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে প্রতিবাদ দিবস পালন করবে। ’

আদিবাসী ইউনিয়নের সহ সভাপতি রাখী মং বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ (২) ধারায় উল্লেখিত আছে এ দেশে বসবাসকারী সকল আদিবাসী বাঙ্গালী বলিয়া বিবেচিত হবে। এ ধারা অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশে বিভিন্ন আদিবাসী জাতিসত্ত্বা বসবাস করেন। তাদের সাংবিধানিক অধিকার চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার স্বীকৃত হতে হবে। সাধারণভাবে সমতলের আদিবাসীরা দরিদ্র ও ভূমিহীন। কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত। আদিবাসী নারীরা ক্রমাগতভাবে সহিংসতা, ধর্ষণসহ নানা ধরনের অত্যাচার, শোষণ ও বৈষম্যের সম্মুখীন। তাদের সুরক্ষায় সরকারকে কমিশন গঠন করতে হবে। ’

দেশে আাদিবাসীদের সংখ্যা কমছে উল্লেখ করে হাজং স্টুডেন্ট কাউন্সিল নেতা নাঈম হাজং বলেন, ‘এবার আদম শুমারিতে বলা হয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১৬ লক্ষ। অথচ পূর্বের আদম শুমারিতে ছিল ৪০ লক্ষ। তাহলে বাকি ২৪ লক্ষ জনগোষ্ঠী কি হাওয়া হয়ে গেল? আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন এদেশে তাদের বসবাসের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। আমরা চাই আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় সরকার একটি কমিশন গঠন করুক। ’

এসময় তারা বেশকিছু দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা;  আদিবাসীদের ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া। সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন করা ও উচ্ছেদকৃত আদিবাসীদের আদি ভিটায় পুনর্বাসিত করা। ১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি, ভিজিএফ, কাবিখাতে আদিবাসীদের অন্তর্ভূক্তিসহ তাদের জন্য স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা, চুক্তি অনুসারে এলাকা থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা, সেখানে সব ধরনের দমন-পীড়ন বন্ধ করা, পাহাড়ী জুম্ম জনগণের দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধাদের ব্যবস্থা করা। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার বাগদা ফার্মে আদিবাসী নেতা রমেশ টুটু, শ্যামল হেমরন, মঙ্গল মান্ডি, নওগাঁর আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন ও নেত্রকোণার সত্যবান হাজং হত্যাকাণ্ডের বিচার করা। বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত চন্দ্ৰ মাহাতোসহ আদিবাসী নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা। আইএলও ১০৭ ও ১৬৯ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করা এবং জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র ২০০৫ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat