প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা রাত জেগে থাকেন বলে দেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নেত্রী ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। বন্যা, করোনা, যুদ্ধের প্রভাব তিনি সফলভাবে মোকাবেলা করে যাচ্ছেন। শক্ত করে দেশের উন্নয়নের ধারা ধরে রেখেছেন। আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ থেকে তাকে শক্তি দিতে হবে।
কথায় কথায় নিজেরা কলহে জড়ানো যাবে না।
আজ শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতিবাচক রাজনীতি আপনাদেরকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে, আপনাদেরই বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে। খেলা হবে, খেলা হবে, রাজনীতির মাঠে খেলা হবে। নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। আসুন, খেলায় আসুন, নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে খেলায় আসুন। আগুন নিয়ে খেলবেন না, আমরা প্রতিহত করব। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে সেই আগুনের খেলা প্রতিরোধ করবে।
বিএনপি ও এক-এগারোর কুশীলবদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও এক-এগারোর কুশীলবরা বিদেশিদের সঙ্গে নিয়ে আবারও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতেছে। খুব খারাপ সময়, খুব ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এ সময়ে ঐক্যের বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ কিছু করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ কিছু করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের কর্মীদের হুঁশিয়ার থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা আজকে কত বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কঠিন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন, সারা বিশ্বে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া, সারা বিশ্বেই সেই প্রতিক্রিয়ায় আজকে জ্বালানি, ফুয়েলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির এই ইনফ্লেকশন, অবাক লাগে শ্রীলঙ্কার কথা বাদ দিলাম, আজকে ইংল্যান্ড-আমেরিকাতে ৯১.১। সর্বত্রই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বাংলাদেশকে এই কঠিন জমিনে অগ্রসর হতে হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের এই দিন শুধু শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস নয়, এই দিন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বন্দি দিবস। এ দিন শেখ হাসিনাকে বন্দি করে আমাদের বিকাশমান গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছে।
কাদের বলেন, রাজনীতি করতে এসে অনেকেই জেলে গেছেন। আমাদের নেত্রীও বন্দি হয়েছেন। তার আগে ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। কিন্তু প্রথম বন্দি হন শেখ হাসিনা। তারা এসে বিরোধী দলের নেতাকে প্রথম বন্দি করে। বিরোধী দলের নেতা প্রথম বন্দি হন। সরকারি দলের নেতা তখনো বন্দি হননি। ড. ওয়াজেদের সঙ্গে কী দুর্ব্যবহার, ঢাকার কোর্টের সামনেও একই দৃশ্য। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে একটুও শ্রদ্ধা তারা দেখাননি।
তিনি বলেন, সেদিন যদি এই দেশের রাজনীতিকদের একটা অংশ ওই জরুরি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করত তাহলে বাংলাদেশের ওয়ান-ইলেভেন টিকতে পারত না। এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হতো। অনেক রাজনীতিক সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাজনীতিকে মাইনাস ফর্মূলায় নিয়ে গেছে। আজকে আমি বলব, আমাদের শত্রু-মিত্র চিনতে হবে। চলার পথে শুত্রু-মিত্র চিনতে হবে। একবার যে বিশ্বাসঘাতক বারবার সে বিশ্বাসঘাতক।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যে ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে উঠেছিল বিএনপি ও সেই এক-এগারোে কুশীলবরা। তারা আবারও বিদেশিদের সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্র করার জন্য সে রকম অবস্থা তৈরি করছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখন আছে। তারা আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা মানতে চায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হবে, এ দেশ এগিয়ে যাবে। এ জন্য তাদের আওয়ামী লীগের প্রতি ভীতি আছে। আজ আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার। তাদের ষড়যন্ত্রকে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে প্রতিহত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
এ জাতীয় আরো খবর..