×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৬-০১
  • ৫৩ বার পঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপ ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) দুই নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় ও মোহাম্মদ রাশেদকে মারধরের প্রতিবাদে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ করেছে ছাত্রলীগ। এতে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস।

গতকাল মঙ্গলবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকার দিকে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবরোধে নামেন।


জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় ও মোহাম্মদ রাশেদ মোটরসাইকেলযোগে এক নম্বর গেট থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মাজার গেট এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারী গ্রুপের সাত-আটজন কর্মী দেশীয় অস্ত্রসহ মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এর পরই তারা আচমকা প্রদীপ ও রাশেদকে মারধর শুরু করেন। ভাঙচুর করা হয় মোটরসাইকেলও। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে ভিএক্স গ্রুপের অনুসারীরা ভোর থেকেই জিরো পয়েন্ট এলাকায়  বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ করে রাখেন।

অবরোধের কারণে এ পর্যন্ত কোনো ট্রেনই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের কোনো বাস। ১ নম্বর গেট থেকে আসা সব বাস, সিএনজি, রিকশা, মোটরসাইকেলকে জিরো পয়েন্ট এলাকার ৪০০ মিটার আগে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ক্যাম্পাসের মধ্যেও বিভিন্ন পয়েন্টে এবং রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে আজ ক্লাস হবে কি হবে না এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত অবস্থায় ভিএক্স গ্রুপের এক কর্মী জানান, যে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো দরকার নেই। আমাদের দুই ছাত্রনেতার ওপর ঘৃণ্য হামলা হয়েছে। যতক্ষণ না এর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

অভিযুক্ত সাত থেকে আট জনের মধ্যে হানিফ, হানিফের আপন ছোট ভাই ইকবাল এবং জালাল নামের তিনজনকে হামলার সময় চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন ভুক্তভোগী প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়। তিনি বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক ৩টার দিকে আমি ১ নম্বর গেইট থেকে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলাম। মাজার গেইট নামক এলাকায় সাত থেকে আট জন লোক অতর্কিত হামলা করে আমাদের ওপর। হামলাকারীদের মধ্যে হানিফ, ইকবাল ও জালালকে আমি শনাক্ত করতে পেরেছি। হামলার একপর্যায়ে তারা আমাকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলিও ছোড়ে। তবে ভাগ্যক্রমে তা আমার গায়ে লাগেনি। এক কথায় বলতে গেলে এটি ছিল সরাসরি একটি হত্যাচেষ্টা।

হামলার কারণ জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, হানিফ ও তার ভাই ইকবালের নামে অনেক অভিযোগ আছে। তারা মাদক কারবার করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যায়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকায় অনেক লিখালিখিও হয়েছে। আমরা এই অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও চেয়েছিলাম। আর এই ক্ষোভ থেকেই তারা আমার ওপর গতকাল হামলা করে।

প্রদীপের করা এই অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ (৪০) কালের কণ্ঠকে মুঠোফোনে বলেন, আমি প্রতিদিনের মতোই সকালে ঘুম থেকে ওঠি। ওঠেই তাজ্জব হয়ে যাই। দেখি ফেসবুকে আমার ছবির ছড়াছড়ি। আমি নাকি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন এক ছাত্রকে রাতে মেরেছি। অথচ না আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি, না আমি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। স্পষ্টতই এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকেই ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় অবরোধ করে রাখা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, এখনো সমাধান হয়নি। আজকে ক্লাস হওয়ার বিষয়েও কিছু বলতে পারছি না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat