পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে। পরিকল্পনায় কোনো দুর্বলতা নেই। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ অস্বস্তিতে আছে, তবে কোনো সংকটে নেই।
আজ রবিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি মূল্যষ্ফীতিতে ইন্ধন দিচ্ছে। এ কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, কথা সত্য। দাম না বাড়িয়ে বিকল্প ছিলো না। তবে আশা করছি অক্টোবরের মধ্যে মূল্যষ্ফীতি কমে আসবে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে উন্নতমানের কয়লা মজুদ আছে। এক সময় কথা উঠেছিলো উন্নতমানের কয়লা থাকতে আমদানি করা হচ্ছে। সেটা করা হয়েছে দেশের মানুষের প্রতিক্রিয়ার কারণে। কখনও কখনও অর্থনৈতিক বিবেচনার চেয়ে রাজনৈতিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দিতে হয়।
কয়লা উত্তোলনে কৃষি জমি দেবে যেতে পারে, ধ্বসে যেতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে আমাদের জমির স্বল্পতা রয়েছে, সেখানে এ ধরনের আশংকা থাকলে সেটা করা ঠিক না। অনেক দেশে কয়লার খনি এলাকা লেক হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সেই ঝুঁকি নিতে চায়নি। এজন্য কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, অনেক অর্থনীতিবিদ দেশের অর্থনীতির অর্জন ও সম্ভাবনা দেখতে পান না। কিন্তু বিদেশি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তি ও সম্ভাবনা তুলে ধরছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মূল্যষ্ফীতির চাপ থাকবে।
তবে এই মূল্যষ্ফীতি পুরোটাই আমদানিজনিত। এরপরও বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যষ্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি, আর্থিক খাতে শৃংখলা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য সুদহার না বাড়িয়ে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতির মাধ্যমে মূল্যষ্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ডলারের বিনিময় হার শিগগির কমে আসবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার বাজেট ব্যবস্থাপনায় ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও বাজেট বাস্তবায়নে বিদেশ থেকে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আনতে হবে। দেশের ব্যাংক থেকেও এক লাখ কোটি টাকার বেশি নিতে হবে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য রাজস্ব ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাজধানির পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিতত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শারমিন রিনভী। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চায়লনায় সংগঠনের সিনিয়র সদস্যরা চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
এ জাতীয় আরো খবর..