খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতে অংশীদারির ভিত্তিতে নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে কনসালটিভ গ্রুপ ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ (সিজিআইএআর)-বাংলাদেশ রিসার্চ পোর্টফোলিও ইন্ট্রোডাকশন অ্যান্ড পার্টনারশিপ ডায়ালগের উদ্বোধন অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা সব সময়ই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বের কিছু অংশে সংঘাতের কারণে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বাড়ছে।
বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন হওয়ায় খাদ্যের দামও বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার, বেসরকারি খাত, উৎপাদক এবং ভোক্তাদের সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন সম্পর্কিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। গবেষণার চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে তা সমাধানে একটি সামগ্রিক পদ্ধতি বের করতে হবে। সিজিআইএআর-এর অংশীদারিত্ব সংলাপ বিশ্ব খাদ্য উৎপাদন ও ভোগের পদ্ধতি রূপান্তরে সাহসী নতুন পদক্ষেপ তৈরি করবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন এবং এই খাতের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ করে যাচ্ছে। মাছের জাত সংরক্ষণ, অধিক উৎপাদনশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল মাছের জাত উদ্ভাবন, গবাদি পশুর জাত উন্নয়ন, পোলট্রির নতুন জাত উদ্ভাবনসহ নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে সরকারের এ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। এ কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বর্তমান সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এর মধ্যে অন্যতম। এর লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মানুষের মধ্যে সহনশীলতা তৈরি করা।
সিজিআইএআর-এর নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে। প্রাসঙ্গিক এবং উপযুক্ত যেকোনো উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকার সব সময় সহযোগিতা করবে- যোগ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। সম্মানীয় অতিথির বক্তব্য দেন সিজিআইএআর-এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ খান। স্বাগত বক্তব্য ও সিজিআইএআরের কার্যক্রম সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন সিজিআইএআর-এর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক টেমিনা লালানি-শরিফ। এ ছাড়া উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।
এ জাতীয় আরো খবর..