চলতি বছরের শেষ দিকে ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২২’ সংসদে পাশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, আগামী আগস্ট পর্য ন্ত খসড়া আইনটিতে বিভিন্ন অংশীজনের পরামর্শ, মতামত নিয়ে সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে তা মন্ত্রী পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। এরপর ডিসেম্বরের সংসদ অধিবেশনে আইনটি পাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজ রবিবার হোটেল রেডিসনে প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে ‘পরামর্শ সভা’র পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন আনিসুল হক।
প্রথমে ‘তথ্য গোপনীয়তা ও সুরক্ষা বিধিমালা, ২০১৯’ শিরোনামে একটি বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ তার একটি খসড়াও ২০১৯ সালে অনলাইনে প্রকাশ করে। এ খসড়াটি নিয়ে তখন সমাজের নানা স্তরে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় খসড়াটি ‘অফিশিয়াল’ নয়। পরে সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এর পরই ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তায় ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২২’ শিরোনামে আইন করার উদ্যোগ নেয় রকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তারই অংশ হিসেবে আইনটির খসড়া সবার মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। গত ২৭ এপ্রিল ছিল অনলাইনে মতামত দেওয়ার শেষ দিন ছিল। তখন উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবিসহ বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তি। এর মধ্যে আইনটি নিয়ে পরামর্শ সভার আয়োজন করে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুস্ঠিত সে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে আইনটা করছি, সেটা যেন সর্বজনীন হয়, সেটা যেন আজকের পৃথিবী যেভাবে বদলাচ্ছে সেই পৃথিবীর যেন সঠিকভাবে আমাদের জনগণ মোকাবেলা করতে পারে সেটার জন্য। এই আইনটা ডেটা (উপাত্ত) কন্ট্রোল করার জন্য হবে না, হবে আইনটা প্রটেকশনের জন্য। ’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ আসবে কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন আমাদের এই সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, তখন সংবিধানে প্রটেকশন এবং গ্যারিান্টি দিয়ে গেছেন। সেটাতে হাত দেওয়ার ক্ষমতা কারো নাই। যেহেতু আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি এবং আমাদের জাতির পিতার নীতি অনুসরণ করি সে কারণে এতে আমরা হাত দিবই না। ’
আইনটিতে ব্যক্তি বা নাগরিকের উপাত্ত সুরক্ষা কতটুকু নিশ্চিত হবে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমরা খুব আশাবাদি। সারা বিশ্বে এ ধরনের আইন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সবগুলো আইন দেখে আমরা একটি উদার, গণতান্ত্রিক এবং ভবিষ্যতমূখী আইন আমরা প্রণয়ন করবো। ’
পরামর্শ সভায় আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবসহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন। সভায় সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন অংশীজন আইনটির বিভিন্ন ধারা ও উপধারা নিয়ে আলোচনা করেন, মতামত দেন।
এ জাতীয় আরো খবর..