বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০টি মিটার গেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়মসংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধানে রেল ভবনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও উপসহকারী পরিচালক কামিয়াব আফতাহি-উন-নবীর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে।
দুদকের মুখপাত্র আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযানকালে টিম রেল সচিব এবং মহাপরিচালকসহ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে।
২০১৫ সালে রেলের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কিনতে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন এবং লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফায় বাড়িয়ে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত করা হয়।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইঞ্জিনগুলোতে ৩টি ক্যাপিটাল কম্পোনেন্টের ভিন্নতা আছে, যা চুক্তিবহির্ভূত। চুক্তিতে তিন হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়ার কথা থাকলেও দুই হাজার হর্সপাওয়ারের দেওয়া হয়েছে, টিএ-১২ মডেলের অল্টারনেটরের পরিবর্তে টিএ-৯ মডেল সংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৯০৯-৯ মডেলের পরিবর্তে ২৯০৯ মডেল দেওয়া হয়েছে।
সরকারের একটি সংস্থার প্রতিবেদন সূত্রে এ অনিয়মের বিষয়টি দুদকের নজরে আসে। এতে বলা হয়, ২০১৫ সালের ওই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৭৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর অধীনে ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকায় ১০টি মিটারগেজ ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ কেনা হয়। ইঞ্জিনগুলো প্রাক-জাহাজিকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় চায়না সার্টিফিকেট অ্যান্ড ইন্সপেকশন কোম্পানিকে (সিসিআইসি)। ২০২০ সালের ২৫ জুলাই ইঞ্জিনগুলো প্রাক-জাহাজিকরণ সমীক্ষা (পিএসআই) সনদ ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়।
সিসিআইসি ওই বছর ১২ আগস্ট নিয়ম ভেঙে একই দিনে দুটি পিএসআই সনদ দেয়। ওই বছর ৩১ আগস্ট ইঞ্জিনগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে এলে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই খালাস করতে প্রকল্প পরিচালককে বাধ্য করা হয়। ইঞ্জিনগুলোতে নিম্নমানের ক্যাপিটাল কম্পোনেন্ট সংযোগ করার বিষয়টি সিসিআইসি ও হুন্দাই রোটেম গোপন রেখেছে। আবার কমিশনিং কমিটির প্রতিবেদনে ইঞ্জিনগুলোর বিভিন্ন ত্রুটির বিষয় তুলে ধরা হলেও ‘পারফরম্যান্স সন্তোষজনক’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..