×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৬-২৩
  • ৭৬ বার পঠিত
পিএসজি তাঁকে কোচ করে পেতে কতটা আগ্রহী ছিল, তা সম্ভবত কারও অজানা নয়। পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফি অবশ্য দুই দিন আগে বলেছেন, জিদানের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগই করেননি। তবে জিদান যে তাঁদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন, সেটি ঠিকই বুঝিয়ে দিয়েছেন আল-খেলাইফি।

কিন্তু জিদানের ইচ্ছাটা কী? এত দিন গুঞ্জনে যা শোনা গেছে, ফরাসি ক্রীড়াদৈনিক লে’কিপে সাক্ষাৎকারে সেটিই আরেকবার জানিয়েছেন জিজু। ফ্রান্সকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জেতানো কিংবদন্তির ইচ্ছা, ফ্রান্স জাতীয় দলেই চক্রটা পূরণ করবেন।

চক্র পূরণ বলতে কী, তা সম্ভবত আর বলার দরকার পড়ে না। খেলোয়াড়ি দক্ষতায় জিদান শুধু ফ্রান্স কেন, ফুটবল ইতিহাসেরই সেরাদের একজন। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ, ইউরো জিতেছেন। ‘লে ব্ল’দের অধিনায়কত্বও করেছেন, অধিনায়ক হিসেবেও তুলেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালে। আর বাকি থাকে কী? কোচ হওয়া!

তাঁর ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে লে’কিপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর সে ইচ্ছার কথা সোজাসুজিই জানিয়ে দিয়েছেন জিদান। আর কী কী করার বাকি আছে, প্রশ্নে জিদান প্রথমে বললেন, ‘আরও কোচিং করিয়ে যাওয়া। এখনো ইচ্ছাটা পুরোপুরিই আছে। এরপর একটা প্রকল্পের পরিচালকই কেন হব না!’

প্রকল্প শুনেই হয়তো পিএসজির দিকেই চোখ চলে যায়। মরিসিও পচেত্তিনোকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় জিদানকে আনতে চায় পিএসজি, সে গুঞ্জনের বয়স তো বছরখানেক হয়ে গেল। কিন্তু কখনো শোনা গেছে, পিএসজির ক্রীড়া প্রকল্প জিদানের পছন্দ নয়, তো কখনো শোনা গেছে, ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হওয়াতেই বেশি আগ্রহ ফরাসি কিংবদন্তির। এখানে সাক্ষাৎকারে জিদান প্রকল্পের কথা বলতেই তাই অনেকের ধারণা হতে পারে, পিএসজি বা এ ধরনের কোনো প্রকল্পের ইঙ্গিতই কি করছেন জিদান?

কোচ হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদকে টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়ে ইতিহাস গড়া জিজু অবশ্য সেভাবে কোনো নাম নেননি। প্রকল্পটা যে ফুটবলেরই হতে হবে, এমন কোনো দিব্যিও নেই। জিদানের কথায় তেমনই ইঙ্গিত, ‘(প্রকল্প বলতে) হয়তো কোনো ক্লাবের সভাপতি বা কোনো কোম্পানির পরিচালক হওয়া। এরই মধ্যে পরিবারের সঙ্গে মিলে ‘জেডফাইভ’ গ্রুপ চালু করেছি আমরা।’

ফুটবলে না হলে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও জিদানের আগ্রহ দেখেই কি না, লে’কিপের সাক্ষাৎকারে এরপর সরাসরি প্রশ্ন হলো ফ্রান্স জাতীয় দলে কোচিং নিয়ে। জিদানও উত্তরে অকপট, ‘অবশ্যই আমি সেটা চাই। একদিন আশা করি আমি জাতীয় দলের কোচ হব। সেটা কখন হবে? তা তো আর আমার ওপর নির্ভর করে না! তবে ফ্রান্স জাতীয় দলে আমি চক্রটা পূরণ করতে চাই।’

নীল জার্সিটা গায়ে তোলার অভিজ্ঞতাকেই জীবনের সেরা অর্জনগুলোর একটি মেনে চলা জিদানের স্বপ্নালু চোখে রোমাঞ্চ, ‘ফ্রান্স দলে আমি খেলোয়াড় হিসেবে ছিলাম, (বুকে হাত রেখে) সেটা আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সুন্দরতম অধ্যায়। সত্যিই! এর চেয়ে সেরা কিছু হতে পারে না। আর যেহেতু খেলোয়াড় হিসেবে আমার সে অভিজ্ঞতা হয়েছে, এখন ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ইচ্ছাই আমার মনে গেঁথে আছে।’

জিদানেরই একসময়ের সতীর্থ ও ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক দিদিয়ের দেশম এখন ফ্রান্সের কোচ। তাদের ২০১৮ বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন, এমবাপ্পের সঙ্গে বেনজেমাকে নিয়ে জিতিয়েছেন ২০২১ নেশনস লিগও। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পর দিদিয়ের দেশমের চুক্তি শেষ। গুঞ্জন আছে, এরপরই জিদান ফ্রান্সের কোচ হবেন। লে’কিপের সাক্ষাৎকারে তাই সরাসরিই প্রশ্ন হলো, তাহলে কি দিদিয়ের দেশমের পরই জিদান নেবেন ফ্রান্সের দায়িত্ব?

এ বেলায় আর জিদানের উত্তর সরাসরি হলো না। হবে কীভাবে, ভবিষ্যতের নিয়ন্ত্রণ তো আর কারও হাতে নেই। জিদান শুধু বললেন, ‘সেটা আমি জানি না। যদি এমন কিছু (জিদান ফ্রান্সের কোচ হওয়া) হওয়ার থাকে হবে, সেটা তখন হোক বা অন্য কোনো সময়ে। আমি যখন বলি আমি ফ্রান্স দলের দায়িত্ব নিতে চাই, আমি সেটি মন থেকেই বলি।’

এই মুহূর্তে দেশমের হাতে গড়া ফ্রান্স দলের প্রশংসাও ঝরল জিদানের কণ্ঠে, ‘এই মুহূর্তে একটা দল ঠিকঠাক এগোচ্ছে। তাদের নিজস্ব লক্ষ্য আছে। তবে এরপর যদি কোনো সুযোগ আসে, আমি সেটি নিতে প্রস্তুত থাকব। আরেকবার বলি, এখানে কোনো কিছুই আমার ওপর নির্ভরশীল নয়। আমার ইচ্ছাটা অনেক প্রবল, এই যা।’

তাহলে পিএসজির কোচ হওয়ার গুঞ্জনে জিদানের নাম আর থাকছে না? ফরাসি সংবাদমাধ্যমের বেশির ভাগেরই গুঞ্জন সে রকমই। জিদানকে পাওয়ার স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা নেই দেখে পিএসজির কাতারি মালিকেরা এখন নিসের কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়েরকে পেতে চাইছেন। তাঁকে পেতে নিসের সঙ্গে পিএসজির কথাবার্তাও শুরু হয়ে গেছে বলে গুঞ্জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat