তিন কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

বরখাস্তের ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করা রিটের প্রাথমিক শুনানির পর আজ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেন বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। তাজকিন আহমেদকে সাতক্ষীরা পৌরসভার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার সচিব, উপসচিব, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও মো. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

আইনজীবী তানভীর আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, পৌরকর, পানির বিলসহ নানা বিষয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কতগুলো ভুয়া অভিযোগ তুলে গত ১৫ জুন তাজকিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। বরখাস্তের সে বিজ্ঞপ্তিটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন তাজকিন আহমেদ। আদালত ছয় মাসের জন্য বরখাস্তের আদেশটি স্থগিত করে রুল দিয়েছেন।

তাজকিন আহমেদকে বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ বিদ্যমান বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ না করে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭০১ টাকা পানির বিল মওকুফসহ যথাযথভাবে বিল আদায় না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র এককভাবে মওকুফ করেছেন। একই সময়ে পৌরসভার হাটবাজার ইজারা বাবদ ৬৬ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫১ টাকা বকেয়া আছে। এ ছাড়া ভ্যাট, আয়কর বাবদ ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৭০ টাকা সরকারি খাতে জমা করা হয়নি।

সেখানে আরো বলা হয়, একই সময়ে এক কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ৯৪৩ টাকার পৌর কর মওকুফ করা হয়েছে। অধিকাংশ কর মওকুফ করেছেন পৌর মেয়র। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্সের ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৭২৬ টাকা মওকুফ করা হয়েছে। এখানেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র এককভাবে ট্রেড লাইসেন্সের ফি মওকুফ করেছেন। এসব অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩২-এর উপধারা (১)(ঘ) মোতাবেক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে একই আইনের ধারা ৩১(১) অনুযায়ী সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।