×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৬-১৮
  • ৭৩ বার পঠিত
বন্যাদুর্গত মানুষের দিকে না তাকিয়ে সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী উৎসব নিয়ে ব্যস্ত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ভাটেরায় ঢাকা উত্তরের কয়েকটি ওয়ার্ড সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এই দুঃসময়ে, জনগণের কষ্টের সময়ে সরকার ব্যস্ত উৎসব নিয়ে। তারা পদ্মা ব্রিজের উদ্বোধন নিয়ে এত ব্যস্ত যে মানুষের কল্যাণের দিকে তাকানোর কোনো সময় নেই।

মানুষের কষ্টের দিকে তাকানোর সময় নেই। এ সময় তিনি বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোকে দুর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
বন্যা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'সারা দেশে বন্যার ধারালো ছোবল। সিলেট, সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ সমস্ত অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। গতকালের নিউজে দেখলাম ফারাক্কার সকল বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে এবং ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা সব নদীর পানি এখন বাড়তে থাকবে। এ দেশের মানুষকে ভাসিয়ে দেবে, তাদের বহুদিনের কষ্ট করা যে ফসল সেই ফলসকে নষ্ট করবে, তাদের বাড়ি-ঘর নষ্ট করবে, তাদের গবাদি পশু নষ্ট করবে, তাদের সমস্ত সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে। '

বন্যা মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'কেন এই বন্যা? ক্লাইমেট চেইঞ্জ হচ্ছে সে জন্য বন্যা আসতে পারে। কিন্তু সেই বন্যাকে মোকাবেলার জন্য বা সেই বন্যায় যাতে কম ক্ষতি হয় সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। তারা গত এক যুগেও ভারতের সঙ্গে যেসব অভিন্ন নদী রয়েছে সেই অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনের চুক্তি করতে পারেনি। '

'বহুদিন ধরে তিস্তা নদীর পানি চুক্তির মুলা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত করা হয় নাই। ফারাক্কার পানি হঠাৎ করেই যে তারা (ভারত) গেইট খুলে দেয় তখন যে পানির ঢল আসে, সেই ঢল সামলানো সম্ভব হয় না। আজকে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে একই ঘটনাগুলো ঘটছে। আজকে এটার জন্য সম্পূর্ণভাবে এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং তার জনগণের প্রতি যে অবহেলা সেটাই প্রমাণ', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বন্যা হবে না কেন? সমস্ত হাওর ও নদীগুলোতে বাঁধ এবং ব্রিজ দেওয়া হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানে এত দুর্নীতি হয়েছে যে সমস্ত বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে এবং নতুন করে যেসব রাস্তা তৈরি করা হয়েছে তা ভেঙে যাচ্ছে। সব কিছু সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। সে জন্য আজকে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে আমাদের দেশে। '

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'এখন সরকার নতুন একটা গান শুরু করেছে। সেই গানটা কী? যে বাংলাদেশে এই যে পদ্মা ব্রিজের উদ্বোধন হবে সেখানে নাকি একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। জাতির সামনে বলেন সেই দুর্ঘটনাটি, কারা করছে―পরিষ্কার করে বলেন। বরাবরই আপনারা এই সমস্ত কথা বলেন। নিজেরা দুর্ঘটনা ঘটান তারপরে এটা বিএনপির ওপরে চাপিয়ে দেন। এটা হচ্ছে আপনাদের চরিত্র, এটা আপনাদের নীতি। '

তিনি বলেন, 'চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আপনাদের ব্যর্থতার কারণেই হয়েছে। যে ডিপোতে আগুন লেগেছে সেই ডিপোর মালিক আপনাদের লোক, আওয়ামী লীগের একজন নেতা। সেখানে তাকে গ্রেপ্তার না করে, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে যারা আহত হয়েছে তাকে আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে। অর্থটা কী? অর্থটা হচ্ছে তারা ওই সমস্ত কাজ করবে, অর্থ আয় করবে আর বিএনপির লোকজন যারা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেবেন। '

৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আহ্বায়ক এস এম কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান এবং সদস্যসচিব আমিনুল হক বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তর বিএনপির আবদুল আলী নকি, আতিকুল ইসলাম মতিন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এ জি এম শামসুল হক, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, আতাউর রহমান চেয়ারম্যান,আখতার হোসেন, মোস্তফা জামাল প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat