×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-২০
  • ৬৬ বার পঠিত
গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’ 

এছাড়া গত ১২ আগস্ট সিলেটে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় বাংলাদেশে অনেক কম। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছেন, বেহেশতে আছেন।’। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দরে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এসব মন্তব্য এরইমধ্যে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে চলছে মন্ত্রীর মন্তব্যের তুমুল সমালোচনা। এতে পিছিয়ে নেই রাজনীতিবিদরা।   

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এসব বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করছেন বিরোধীরা। এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-মানববন্ধনে বিএনপি নেতারা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এসব মন্তব্যের জবাব দিতে হবে।

এদিকে ‘বিদেশে আওয়ামী লীগের বন্ধু থাকলেও বিএনপির মতো প্রভু নেই’ এমন মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। কারও দয়ায় নয়, জনগণের সমর্থনেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে উল্লেখ করে নেতারা আরও বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তার ব্যক্তিগত মত। এর দায় কোনোভাবেই দল বহন করবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এসব বক্তব্যের জবাব দিতে হবে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, তাদের বক্তব্য প্রমাণ করে ভারতের আনুকূল্যে সরকার টিকে আছে। প্রশ্ন উঠেছে, দেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে কি না তা নিয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিতে হবে বর্তমান সরকারকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারতের সরকারকেও এর জবাব দিতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করে বাংলাদেশের মানুষ যখন নিজেদের স্বাধীন বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন, তখন শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকারের সহযোগিতা চান। অর্থাৎ, তারা প্রমাণ করলেন যে অন্যের আনুকূল্যেই টিকে আছে আওয়ামী লীগ সরকার।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী আছেন। তারা যখন বিভিন্ন টকশোতে কথা বলেন, তখন মনে হয় মোমেন সাহেব যে বলেছেন বেহেশতে আছি, সেটা অমূলক নয়! তারা প্রমাণ করতে চান, আমরা সত্যিই বেহেশতে আছি!’

ফখরুল আরও বলেন, আজ কারা ভালো আছে? একটা এলিট শ্রেণি ভালো আছে। এই এলিট শ্রেণি কারা? তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ! তাদের মধ্যে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা পর্যন্ত রয়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতাদের নানা মন্তব্যের জবাব ছিল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। কারও দয়ায় নয়, জনসমর্থনে বর্তমান সরকার টিকে আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশে আওয়ামী লীগের বন্ধু থাকলেও বিএনপির মতো কোনো প্রভু নেই।

এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কেবল সরকার বা আওয়ামী লীগই বিব্রত না, বাংলাদেশের কোটি কোটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ আজ বিব্রত। তিনি তার বক্তব্যে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। আমি মনে করি তার বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে, কথা বলার ক্ষেত্রে সরকারের একটা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ড. এ কে আব্দুল মোমেন দলের কেউ না হওয়ায় তার বক্তব্যের দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat