চিত্রনায়ক শাকিব খান সব সময় বলে থাকেন, ‘ভক্তরাই আমার সব। আমি যা–ই হয়েছি, সব ভক্তদের কারণেই। আমার সুসময় ও দুঃসময়ে তারাই পাশে ছিল।’ শাকিবের সেই ভক্তরাই ৯ মাস পর দেশে ফেরা শাকিবকে বিমানবন্দরে বরণ করে নিলেন।
দীর্ঘ ৯ মাস পর গতকাল বুধবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন শাকিব খান। প্রিয় নায়কের আগমনের খবরে গতকাল সকাল থেকে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট, ২ নম্বর টার্মিনাল ও বিমানবন্দরের উল্টোপাশের সড়কে ভক্ত–শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেন। কাছ থেকে একনজর দেখা কিংবা ছুঁয়ে দেখার আশায় রোদ–বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাঁরা অপেক্ষা করেছিলেন। ভক্তদের নিরাশও করেননি শাকিব খান। কথা বলেছেন, তাঁদের ভালোবাসায় বরাবরের মতো নিজেও আপ্লুত হয়েছেন। শাকিব এতটাই আপ্লুত ছিলেন, ছুটে আসা ভক্তদের সঙ্গে সেলফিও তোলেন, যেমনটা সচরাচর তাঁকে দেখা যায় না।
বেলা ঠিক ১টা ৪ মিনিটে শাকিব খান ভিআইপি লাউঞ্জে এসে পৌঁছান। বিমানবন্দরে নেমে শাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনটা খুব ছটফট করছিল। কখন দেশের মাটিতে নিশ্বাস নেব। পরিচিত ও চেনামুখগুলো দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। শাকিবকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান তাঁর ছোট বোনের স্বামী আসিফ ওয়াহিদ ও চাচাতো ভাই মনির জামান।
বিমানবন্দরে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শাকিব খান যখন বাইরে বের হন, তখন বেলা দেড়টা বাজে। তার আগে থেকে নানা ধরনের লেখা সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল নয়টা থেকে অপেক্ষা করছিলেন শাকিব খানের ভক্তরা।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভক্তদের সংখ্যাও। ভক্ত ও গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে শাকিব খান বলেন, ‘আপনারা সবাই যে আমাকে এতটা মিস করেছেন, ভালোবেসেছেন—সত্যিই মুগ্ধ। আপনাদের এত দিন আমি ভীষণ মিস করেছি। আমার সব ভক্ত আমাকে যে ভালোবাসেন, এটা জানতাম। আমার খারাপ ও ভালো সময়ে তাঁরা পাশে ছিলেন। কিন্তু তাঁরা যে আমাকে এতটা ভালোবাসেন, দেশের বাইরে থাকার পর এই উপলব্ধি নতুন করে হয়েছে। সবার এই ভালোবাসার মূল্য কীভাবে দেব বা এর কী মূল্যায়ন হওয়া উচিত, তা আমার জানা নেই। এই ভালোবাসার কাছে আমার মাথা সব সময় নত হয়ে আসে।’
বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফেরার পথে শাকিবকে ফোন করে তাঁর ছেলে আব্রাম খান। ছেলের সঙ্গে ভিডিওকলে কথাও বলেন তিনি। বাবার সঙ্গে যখন কথা বলছিল, তখন স্কুল থেকে বসুন্ধরার বাসায় ফিরছিল সে। বিকেল চারটার পর বাবার সঙ্গে দেখা করতে গুলশানের বাসায় আসে সে। বাবা–ছেলে কিছু সময় একসঙ্গে কাটায়ও।
এদিকে ৯ মাস পর ছেলের দেশে ফেরার খবরে শাকিবের মা রেজিয়া বেগম তাঁর ছেলের পছন্দের নানা পদের খাবার রান্না করেন। দুপুরের খাবারের এ তালিকায় ছিল টমেটো দিয়ে টেংরা মাছ, লাউশাক, চিংড়ি দিয়ে বরবটি এবং আলু দিয়ে গরুর মাংস। শাকিব তাঁর গুলশানের বাসায় ফিরেই বাবা–মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করেন। ছেলেকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন তাঁরা। ছোট বোন মনিও তাঁর সন্তানদের নিয়ে এসেছিলেন ভাইয়ের ঢাকায় ফেরার খবরে। বোনকেও জড়িয়ে ধরে আদর করেন শাকিব। বাসায় তৈরি হয় আবেগঘন এক পরিবেশ। একটা পর্যায়ে ফ্রেশ হয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে বসেন। শাকিব জানান, ‘লম্বা ভ্রমণের ক্লান্তি পেয়ে বসেছে। আজ (গতকাল) একটু বিশ্রাম নেব। কাল থেকে নতুন কাজের পরিকল্পনায় নেমে পড়তে হবে।’
এ জাতীয় আরো খবর..