জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা ও নামকীর্তনসহ নানা আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিন সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার হয়ে মেইন গেইটে এসে শেষ হয়।
এরপর বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে গীতাপাঠ করেন অনামিকা মল্লিক নামে এক শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী দেবানন্দ মন্ডল ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেবাশীষ চন্দ্র শীল সূচনা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি উপাসনালয় স্থাপনের দাবি জানান।
আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল বালা।
এ সময় তিনি বলেন, আজ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব দিবস। কারণ ভগবান বা সৃষ্টিকর্তার জন্ম বা মৃত্যু হয় না। এই দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আসলে পৃথিবীতে যখন পাপ বেড়ে গিয়েছিল তখনই শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়েছিল।
আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনির্বাণ সরকার।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, প্রত্যেক ধর্মের মূল বার্তা একটিই। সেটি হচ্ছে শান্তি। আজ এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকে উপস্থিত হয়েছেন। যার মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ পেয়েছে। শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব স্থান মথুরায় আমি দুইবার গিয়েছি৷ সেখানকার বাস্তব চিত্র দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে প্রতিটি ধর্মাবলম্বীদের জন্যই আলাদা আলাদা উপাসনালয় থাকবে।
সমাপনী বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মন্ডল। তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আজকের উৎসব যথাযথভাবে উদযাপন সম্ভব হচ্ছে। এটিই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত।
আলোচনাসভা শেষে হরিনাম কীর্তন করা হয়। কীর্তন শেষে সবার মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. কাজী নাসিরউদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এ জাতীয় আরো খবর..