২০০৬ সালের কথা। আজ থেকে ১৬ বছর আগে জন্মভূমি উরুগুয়ে ছেড়ে জীবন ও জীবিকার টানে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ। নেদারল্যান্ডসের ক্লাব গ্রনিনজেন দিয়ে শুরু। এরপর আরেক ডাচ্ ক্লাব আয়াক্স ঘুরে লিভারপুল, বার্সেলোনা ও আতলেতিকো মাদ্রিদ। ইউরোপ অভিযানে ইতি টেনে ১৬ বছর পর আবার দেশে ফিরছেন সুয়ারেজ।
এমন নয় যে ২০০৬ সালের পর আর উরুগুয়েতে যাননি সুয়ারেজ। কখনো গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে, কখনো আবার জাতীয় দলের হয়ে খেলতে উরুগুয়েতে গেছেন। এবারের যাওয়ার সঙ্গে সেগুলোর মিল নেই। এবার যে তিনি ফিরেছেন আঁতুড়ঘরে! নিজের প্রথম পেশাদার ক্লাব নাসিওনালের সঙ্গে চুক্তি করেছেন সুয়ারেজ। ১৬ বছর পর আবার পরিবার-পরিজনসহ নিজের দেশে বসবাস করবেন বার্সেলোনার সাবেক তারকা।
সুয়ারেজ নাসিওনালে ফিরছেন, এটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল আগেই। কাল তাঁকে ক্লাবটির সমর্থকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়র করিয়ে দেওয়া হয়। ক্যারিয়ারের এমন একটি সময়ে সুয়ারেজকে শুভকামনা জানিয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে হয়তো সুয়ারেজের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ ও বন্ধু লিওনেল মেসির শুভেচ্ছা জানানোটাই।
উরুগুয়েতে গিয়ে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই মেসির শুভেচ্ছা জানানো বার্তাটি পেয়েছেন সুয়ারেজ। মেসি সেই বার্তায় লিখেছেন, ‘তুমি এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছে গেছ। এ কারণে তোমাকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানাতে পারছি না। তোমার ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে শুভকামনা রইল।’
ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে সুয়ারেজের জন্য আবার উরুগুয়েতে ফিরতে পারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, মেসি তাঁর বার্তায় সেটিও উল্লেখ করেছেন, ‘আমি জানি নাসিওনাল আর বাড়িতে ফিরতে পারা তোমার জন্য কত বড় ব্যাপার। অনেক বছর পর তুমি তোমার দেশে থাকবে, বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেবে।’
এমনিতে উরুগুয়ের ক্লাব নাসিওনালের খেলা দেখা বা দলটির খেলার খোঁজখবর রাখার কথা নয় মেসির। কিন্তু এখন যে সেখানে বন্ধু সুয়ারেজ আছেন। বিষয়টি যে পাল্টে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। মেসিও সুয়ারেজকে পাঠানো বার্তায় সেটাই লিখেছেন, ‘আমি তোমাকে শুভকামনা জানাচ্ছি। এখন আমি এখান থেকেই নাসিওনালকে অনুসরণ করব।’
নাসিওনালের সঙ্গে মেসির শৈশবের ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের সঙ্গে দ্বৈরথ আছে। দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই কোপা লিবের্তাদোরেসে মাঝেমধ্যেই দেখা হয় দুই ক্লাবের। ১৯৮৮ সালে নিউওয়েলসকে ৩-০ গোলে হারিয়েই লিবের্তাদোরেস কাপের শিরোপা জিতেছিল নাসিওনাল।
সেই দ্বৈরথের কথাও সুয়ারেজকে মনে করিয়ে দিয়েছেন মেসি, ‘নাসিওনালের সঙ্গে আমাদের নিউওয়েলস সমর্থকদের খুব বেশি ভালো স্মৃতি নেই।’ তাতে কী এসে যায়! নাসিওনাল-নিউওয়েলসের দ্বৈরথ কী সাধ্য সুয়ারেজের প্রতি মেসির ভালোবাসায় ব্যাঘাত ঘটায়! মেসি লিখেছেন, ‘তুমি তো জানো, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি তোমাকে শুধু বলব, শুভকামনা রইল। আশা করছি দ্রুতই দুজনের দেখা হবে। তোমার জন্য বড় একটু চুমু রইল!’
এ জাতীয় আরো খবর..