রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পিছিয়ে আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক রফিকুল ইসলাম এ দিন ধার্য করেন।
এদিন মামলাটির যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিল। তবে এ মামলা আসামি মুফতি আব্দুল হাইকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
এ জন্য আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১১ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৩ এপ্রিল আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাত আসামি। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। এ মামলায় গত ২১ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। ওই হামলার পর রমনা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর এ ঘটনায় হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে মাওলানা আকবর হোসেন, আব্দুল হান্নান, আরিফ হোসেন, শাহাদাত হোসেন, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া, আবু বকর ও আবু তাহের কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়েছে। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..