×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৮
  • ৬৪ বার পঠিত
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন ২০০০ (দুই হাজার) জন লোক ঢাকায় চলে আসে। নগরবাসী পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব অনুভব করছে। শহরের সকলেই সম্ভাব্যভাবে জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন। এমতাবস্থায় ঢাকা শহরের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

বুধবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)-এর উদ্যোগে ডিএনসিসির সহযোগিতায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘টুগেদার ফর ক্লাইমেট’ শিরোনামে জলবায়ু-বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং মাইগ্রেশনের মতো বৈশ্বিক সমস্যার সরাসরি প্রভাব পড়ে শহরের ওপর। জলাধার উদ্ধার প্রকল্প থেকে শুরু করে পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণের মতো নানা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবেলা করে টেকশই শহর গড়ে তুলতে উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য প্রাইভেট সেক্টর, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার এবং জনগণের সঙ্গে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তরের পর থেকে আমরা খালগুলো উদ্ধারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। খালগুলো উদ্ধার করতে গিয়ে আমরা দেখেছি বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ও অন্যন্য ভবনের পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি সারফেস ড্রেনে এবং খালে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে খালের পানির পাশাপাশি পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ’

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা নিয়মিত লেক পরিষ্কার করছি, খাল ও ড্রেন পরিষ্কার করছি। কিন্তু বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের লাইন খালে গিয়ে প্রতিনিয়ত খালের পানিকে দূষিত করছে। দূষণের ফলে খালে মাছের চাষ করতে পারছি না, সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। এটি আর হতে দেওয়া যাবে না। পয়ঃবর্জের লাইন সারফেস ড্রেন অথবা খালে দেওয়া যাবে না। শহরের অভিজাত এলাকায় আপনারা বাসা বাড়িতে সুখে থাকবেন আর আপনাদের পয়ঃবর্জ্য সারফেস ড্রেনে এবং খালে সংযোগ দিয়ে খাল দূষণ করবেন সেটা হতে পারে না। এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

একটি পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জনগণের সহযোগিতার আহ্বান করেন ডিএনসিসি মেয়র।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নত দেশগুলোর দায় রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমি মেয়র'স মাইগ্রেশান কাউন্সিলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সহায়তায় ৩টি প্রস্তাব করেছি-

১. জলবায়ু সংকট যেহেতু মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, তাই জলবায়ু অভিযোজনে আমাদের আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ দরকার। মোট জলবায়ু তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ ঢাকার মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল এবং দ্রুত বর্ধনশীল শহরের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন।

২. আমাদের অভিবাসনকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের একটি রূপ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা উদ্বাস্তু তাদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সুযোগ দিতে হবে।

৩. আমাদের এই কর্মগুলোর সঙ্গে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়িয়ে বিশেষ করে সবুজ খাতে অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, এইচএসবিসি বাংলাদেশ-এর সিইও মো. মাহবুব উর রহমান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারর্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat