×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৬
  • ৫৪ বার পঠিত
দীর্ঘ ছয় বছর আগে রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গি মারা যান। এ ছাড়া হাসান নামে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে। পালিয়ে যান একজন।

তারা সবাই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে সাড়ে তিন বছর আগে ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলেও এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়নি। তবে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
মামলা ও সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ‘জাহাজ বিল্ডিং’-এর পঞ্চম তলায় ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই ভোরে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গি মারা যান। এ ছাড়া হাসান নামের একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশ। পালিয়ে যান একজন। তারা সবাই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে জানিয়েছিল পুলিশ। ওই ঘটনার পরদিন রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক শাহজাহান আলম বাদী হয়ে ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ (২), ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ ধারায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত বছরের ৯ মে মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। একই বছরের ১৮ জুলাই আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। মামলাটি অধিকতর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।

এ মামলার আসামিরা হলেন রাকিকুল হাসান রিগ্যান (২১), সালাহ উদ্দিন কামরান (৩০), আব্দুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩) ও হাদিসুর রহমান সাগর (৪০)। আসামিদের মধ্যে আজাদুল কবিরাজ পলাতক। আব্দুর রউফ ও আবুল কাশেম জামিনে। এ ছাড়া অন্য সাত আসামি কারাগারে আটক রয়েছেন।

মামলার বিচার শুরু না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলাটির তদন্তে প্রায় আড়াই বছর সময় লেগেছে। ২০১৯ সালের মে মাসে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলায় কোনো আসামি পলাতক থাকলে বিচার শুরু করতে একটু সময় লেগে যায়। এ মামলায়ও এক আসামি পলাতক রয়েছে। এ জন্য সময় লেগেছে। এ ছাড়া আমরা অভিযোগ গঠন শুরু করি। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে অনেকটা সময় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ জন্য কার্যক্রম তেমন এগোয়নি। ’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য প্রস্তুত আছি। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলায় সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত বিচার শেষ করার চেষ্টা করব। ’

আসামি আবুল কাশেমের আইনজীবী মোহাম্মদ জাকির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার অন্য আসামিদের আদালতে হাজির করতে না পারায় অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়ে গেছে। অথচ আমরা প্রতিনিয়ত হাজিরা দিয়ে আসছি। এ মামলার বিচারকাজ দ্রুত শেষ হোক, সেটাই চাই। এতে যারা দোষী তারা সাজা পাবেন। আর যারা নির্দোষ তারা মুক্তি পাবেন। ’

তিনি আরো বলেন, ‘এ মামলার আসামি আবুল কাশেমের বয়স ৬৫ বছর। তাকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে। আদালত যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন তাহলে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আশা করি, নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। ’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat