আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছে টেলিভিশন ও কিছু পত্রপত্রিকা। এই বাক্সটাই তাদের বাঁচিয়ে রাখছে। না হলে হারিকেন দিয়ে খুঁজেও তাদের পাওয়া যেত না। আজ রবিবার রাজধানীর তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, তারা বলে আগামী নির্বাচনে আসবে না। আরে মুরোদ থাকলে তো আসবে। বিএনপির ভোট নাই, মুরোদ নাই, নেতা নাই। নির্বাচন এলেই বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করে, তারা দেশের মানুষের কাছে যায় না।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, বিএনপি নেতারা রাতে বালিশে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করে আগামীকাল কোন মিথ্যা কথাটা বলবে। এই মিথ্যাবাদী একটি দল দেশে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরা দেশের মানুষের কাছে যায় না।
তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয় জানিয়ে বিএনপিকে উদ্দেশ করে মায়া চৌধুরী বলেন, বিদেশিরা কি আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে? এ দেশের জনগণ হচ্ছে ক্ষমতার মালিক। নির্বাচন ছাড়া কি আপনারা ক্ষমতায় যেতে পারবেন?
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এখন আর দেশে এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার নাই। দরজা বন্ধ করে সিল মেরে ক্ষমতায় যাবেন সেই অবস্থা এখন আর নাই।
বিএনপি দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় জানিয়ে মায়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে, আমাদের কান খাড়া রাখতে হবে। শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে রুখতে যেখানে ষড়যন্ত্র হবে, সেখানেই দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ হাবিব হাসান বলেন, এই তুরাগ আমার নিজের এলাকা, এটি বঙ্গবন্ধুকন্যার একটি ঘাঁটি, এটি নৌকা মার্কার ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতেই আমার রাজনৈতিক হাতে খড়ি হয়েছে। শৈশব, যৌবন শেষ করে আজ এ পড়ন্ত বেলায় এসে আপনারা আমাকে ঢাকা-১৮ আসনের সেবক বানিয়েছেন। এই জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলতে চাই- সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ফুটপাত দখলকারী, ইমেজ সংকটে ভোগা নেতাদের আমরা তুরাগে নেতৃত্বে আনতে চাই না। হাইব্রিডমুক্ত দক্ষ নেতৃত্বই হবে তুরাগ আওয়ামী লীগের আগামীর কাণ্ডারি।
তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় নগরের অন্য নেতারাও বক্তব্য দেন।
সম্মেলনকে সামনে রেখে দুপুর থেকেই নেতাকর্মীরা স্লোগান নিয়ে মাঠে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তুরাগের কামারপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সম্মেলনে পদপ্রত্যাশী নেতারা নানান রঙের গেঞ্জি, ক্যাপ পরিধান করে, রং-বেরংয়ের ফেস্টুন হাতে নিয়ে সম্মেলনের মাঠকে রঙিন করে তোলেন।
আজকের সম্মেলনে থানায় প্রায় দেড় ডজন নেতা পদপ্রত্যাশী হিসেবে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। এদের মধ্যে তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন। থানার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাদেকুর রহমানও বড় একটি মিছিল নিয়ে মাঠে আসেন। এ ছাড়া ওয়ার্ড প্রার্থীদের মধ্যে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থী, থানার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থী ইব্রাহিম গনি ঢোল, বাদ্য-বাজনাসহ বিশাল মিছিল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..