তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পদ্মা সেতু হওয়াতে সারাদেশের মানুষ যেখানে উল্লসিত, পুলকিত ও গর্বিত, সেখানে বিএনপির বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা ঠিক সমপরিমাণ লজ্জিত এবং পদ্মা সেতু তাদের গলার কাঁটা হয়ে গেছে। আজ সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকরা বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনে পাঁচ-দশ হাজারের বেশি লোক হয়নি’ এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানিকতায় শুধুমাত্র ৩ হাজার মানুষকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো, সেখানে আর কারো যাওয়ার সুযোগ ছিলো না এবং তাদের প্রত্যেককে করোনা টেস্ট করে সেখানে যেতে হয়েছে। আপনারা যারা সাংবাদিক, যারা অনুষ্ঠানটি কভার করেছেন তাদেরকেও তাই করতে হয়েছে।
আর এ উপলক্ষে যে জনসভা হয়েছে, সেখানে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে। সেদিন যদি পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ দেয়া হতো, সেখানে কতো মানুষ হতো সেটা আমি জানি না, তবে তাহলে মনে হয় দেশের সব মানুষ সেখানে চলে যেতো। ’
ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির কিছু নেতার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তাদের সত্যিই মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে, না হলে তারা এভাবে উদভ্রান্তের মতো কথা বলতো না, বিশেষ করে রিজভী আহমেদ। তিনি বেশ কিছু দিন অসুস্থ ছিলেন এবং আমার মনে হয় পুরোপুরি সুস্থ হননি বলেই অসুস্থ মানুষের মতো কথা বলছেন। তার আরো একটু চিকিৎসার দরকার আছে বলে মনে হচ্ছে। ’ বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দেবে -এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আদালত ঘেরাওয়ের বক্তব্য সরাসারি আদালতের প্রতি হুমকি স্বরূপ। আমি জানি না আদালত সেটিকে কিভাবে বিবেচনা করবেন, তবে এটি সরাসরি আদালতকে হুমকি দেয়ার শামিল। ’
এর আগে তথ্য অধিদফতর এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রকাশিত ৬টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর এসময় বক্তব্য রাখেন। মুজিববর্ষে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোর ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুভিত্তিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও কবিতা নিয়ে তথ্য অধিদফতর প্রকাশিত সংকলন ‘মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মুজিব শতবর্ষ আবার আসবে না, দেড়শত বা দুইশতবর্ষ পরে আসবে। তখন আমরা অনেকেই বেঁচে থাকবো না। আমরা ভাগ্যবান যে আমরা মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করতে পেরেছি। এই প্রকাশনার মাধ্যমে মুজিববর্ষের অনেক বিষয় সংরক্ষিত থাকবে।
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের বাৎসরিক গবেষণা প্রকল্পপ্রসূত অন্যতম সেরা পাঁচ গ্রন্থ ‘চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও পুণরুদ্ধার’, ‘স্টেট, আইডেনটিটি এন্ড ডায়াসপোরা ইন তানভীর মোকাম্মেলস ফিল্মস’, ‘প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখা : পাঁচ দশকের বিবর্তন’, ‘বিদেশি চলচ্চিত্রে- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপস্থাপন’ ও ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলচ্চিত্র সমালোচনার স্বরূপ’ বইগুলো থেকে অনেক কিছু জানার আছে বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যসচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, তথ্যবহুল ও গবেষণালব্ধ এই গ্রন্থগুলো শুধু তথ্য মন্ত্রণালয়কেই নয়, দেশের তথ্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গণকেও সমৃদ্ধ করেছে। তিনি বইগুলো সকলকে পড়ে দেখার আহ্বান জানান।
এ জাতীয় আরো খবর..