পূর্ব ইউরোপে তিন লাখ সেনা মোতায়েন করতে চাইছে ন্যাটো। এই সেনারা মূলত রাশিয়ার সঙ্গে পূর্ব ইউরোপের সীমান্তে নজরদারি চালাবে।
স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর ন্যাটো জোটের সম্মিলিত প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে একে সবচেয়ে বড় পুনর্গঠন বলে জানিয়েছেন ন্যাটোপ্রধান ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ। সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সোমবার ব্লাসেলসে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবারই মাদ্রিদে ন্যাটোর বার্ষিক সভা শুরু হয়েছে। জার্মানির ব্যাভারিয়া থেকে জি-৭ এর নেতারা সেখানে যোগ দিয়েছেন। তার আগে ন্যাটো বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে, তার রূপরেখা জানিয়েছেন স্টলটেনবার্গ।
তিনি বলেন, ন্যাটোর এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য— রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই ন্যাটো ৪০ হাজার সেনা পূর্ব ইউরোপের স্ট্র্যাটেজিক জায়গায় মোতায়েন করেছিল। এবার সেই সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্টলটেনবার্গ বলছেন, ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি রাশিয়ার প্রত্যক্ষ হুমকির পরই এই সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তার কথায়, নতুন এই ‘সামরিক ব্লুপ্রিন্ট’ পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যাপকভাবে উন্নত করা হবে।
ন্যাটোর এই ‘র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্স’ হচ্ছে স্থল, নৌ ও বিমান সেনা এবং সরঞ্জামের সমন্বয়ে তৈরি করা একটি বাহিনী। কোনো আক্রমণ হলে যাদের দ্রুতগতিতে মোতায়েন করা যাবে। ২০১৪ সালের আগে এ বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার, আর এখন তা বেড়ে ৪০ হাজার হয়েছে।
থিংকট্যাংক গ্লোবগ্লোবসেকের প্রধান জানিয়েছেন, ন্যাটোর এই পদক্ষেপ এই সময়ের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কথায়, ফ্রান্স ইতোমধ্যে রোমানিয়ায় সেনা ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। এবাবেই গোটা পূর্ব ইউরোপ ঘিরে ফেলতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
২০০৬ সালে ন্যাটোর বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, প্রতিটি সদস্য দেশ নিজেদের জিডিপি-র ২ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করবে। বারাক ওবামার সময় মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন জিম টাউনসেন্ড।
ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ন্যাটো ওই সিদ্ধান্ত নিলেও বাস্তবে দেখা যেত সব সদস্য তা মানছে না। এবারের সভায় সে বিষয়ে ফের আলোচনা দরকার। সব রাষ্ট্র যাতে ন্যাটোয় সমান বিনিয়োগ করে, তা দেখা দরকার। ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ জাতীয় আরো খবর..