স্বাধীনবাংলা, নিউজ ডেস্কঃ
পুরো
পরিবারকে হারিয়ে, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অকুতোভয় রাজনীতিক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ। দেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের সরকার প্রধানের কৃতিত্ব তাঁর। তুলনার বিচারে দেশের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়কও তিনি। ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু, দেশ ছাপিয়ে তাঁর অর্জন বিশ্ব রাজনীতিতেও, পেয়েছেন বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি। হারিয়েছেন পুরো পরিবারকে, নিয়েছেন জীবনের ঝুঁকি। তবুও কান্ডারী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অকুতোভয় এই রাজনীতিকের ৭৪তম
জন্মদিন আজ।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান, একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম গোপালগঞ্জে। এরপর ঢাকার আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয়, বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন।
হাসিনার রাজনীতির পাঠ পারিবারিক আবহেই। কলেজে ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
১৯৬৭ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার সময় শেখ হাসিনা তার স্বামী ও ছোট বোন শেখ রেহানাসহ জার্মানিতে ছিলেন। রাজনৈতিক পটবদলে ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে হয় শেখ হাসিনাকে।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রবাস থেকেই মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১৭ মে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন হাসিনা।
১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তিনটি আসনে বিজয়ী হন। ৯০ সালের সামরিক স্বৈরশাসন বিরোধী আণ্দোলনে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে, সোচ্চার ছিলেন সংসদীয় ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হলে ২৩ জুন দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার মধ্যে দিয়ে ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
প্রথমবারের মতো সরকারের মেয়াদ পূরণ করার কৃতিত্বও আছে শেখ হাসিনার। কিন্তু, ২০০১ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলের নেতা নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় গ্রেনেড হামলা করে তাঁকে হত্যাচেষ্টা করা হয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে জয়ী হয়। এর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মতো এবং একটানা তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। শেখ হাসিনা নিজ দেশেই কেবল নন, বিশ্বেও সমাদৃত। ২০১০ সালে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এমডিজি অর্জনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘ পুরস্কার, ২০১৫ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচারণার জন্য ‘আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পদক পান। ২০১৫ সালে পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ বৈশ্বিক পুরস্কার 'চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ' লাভ করেন শেখ হাসিনা। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে 'ভ্যাকসিন হিরো' সম্মানে ভূষিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার, বিপন্ন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বব্যাপি প্রশংসিত, মানবতাবাদী রাষ্ট্রনায়কের নাম এখন শেখ হাসিনা। সূত্র: ডিবিসি