ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে ভোলার চরফ্যাশনের পাঁচ হাজার পরিবারের বাড়িঘর।
সোমবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় তেতুলিয়া নদীতে আকস্মিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে উপজেলার চরকলমির পাঁচ হাজার পরিবারের বাড়িঘর।
হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি ঢুকতে থাকায় বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রসহ উঁচু রাস্তাতে আশ্রয় নেন লোকজন। এমন অবস্থায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকাজুড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সোমবার দিনভর দমকা হাওয়া ও ঝড়োবৃষ্টি ছিল। শেষ বিকেলে হঠাৎ বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং মুষলধারে বৃষ্টি হতে থাকে। এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতে সন্ধ্যার আগেই কয়েকটি গ্রাম ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। তীব্র স্রোতে ভেসে যায় মালামাল।
আতঙ্কিত হয়ে লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান। কিছু সময়ের মধ্যে রাস্তা তলিয়ে লেগে এতে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়।
১৯৭০ সালের পর জোয়ারে এতো পানি কখনো হয়নি বলে জানান তারা। তবে সন্ধ্যার পর ভাটা শুরু হলে, কিছু রাস্তার পানি নামতে শুরু করলে জনমনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দেশের উপকূলীয় ছয় জেলায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব জেলা হলো: খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রাম।
বিকেলে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, রেমালে ১৯ জেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোট ১৯টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেমালে। জেলাগুলো হলো: খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর এবং যশোর।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭ এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভার সংখ্যা ৯১৪। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি এবং আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি।
এ জাতীয় আরো খবর..