বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে প্রথম ব্র্যান্ডের গানে নতুন ধারা তৈরি করেন আইয়ুব বাচ্চু। অসাধারণ গানের কথার সঙ্গে শ্রুতিমধুর সুর, সংগীতায়োজন আর তার ভরাট কণ্ঠে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতেন তিনি। আজ তার জন্মদিন।
শুধু গীতিকার, সুরকার কিংবা গায়ক হিসেবেই প্রতিভা ছিল না আইয়ুব বাচ্চুর। এদেশের সেরা গিটারিস্টও ছিলেন তিনি। হৃদয়ে তোলপাড় করে দেয়া তার গান দর্শক হৃদয়ে মুহূর্তেই ঝড় তোলে।
চট্টগ্রামের এই কৃতী সন্তান আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। গানকে ভালোবেসে সংগীতজীবন শুরু করেন ১৯৭৭ সালে। তার এক বছর পরেই ব্যান্ড জগতে পা রাখেন তিনি।
১৯৮০ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন সোলস ব্যান্ডে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি দলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে তিনি ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড (এলআরবি) ব্যান্ডদল গঠন করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই দলটির সঙ্গেই মেইন ভোকাল হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
তার প্রথম গাওয়া গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। আর প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তবে গানের জগতে সফলতা পান তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’-এর মাধ্যমে।
দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ার জীবনে অসংখ্য গান ভক্তদের উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। গায়কী জীবনে ১২টি ব্যান্ড, ১৬টি একক ও বহু মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছিল তার।
অসংখ্য দর্শকপ্রিয় গানের মধ্যে তার কয়েকটি গান হলো ফেরারি মন, হাসতে দেখো, কষ্ট পেতে ভালোবাসি, চলো বদলে যাই, সুখেরই পৃথিবী ইত্যাদি।
তার সব কালজয়ী গান গাওয়ার সময় তিনি নিজে যেমন দরদ দিয়ে গান গেয়েছেন, তেমনি দর্শকও কেঁদেছে অঝোর ধারায়। আবেগী এসব গানে সুখ, দুঃখ বেদনা , প্রেম, ভালোবাসা, কষ্ট সব অনুভূতিই আলাদা এক মাত্রা পেতো তার কণ্ঠে।
২০১৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এই কিংবদন্তী। তবে অভাব অনুভব করতে দেয়নি রেখে যাওয়া গানগুলো।
বরং দিন গড়ানোর সাথে সাথে তার গাওয়া গান আরও বেশি করে হৃদয়ে লালন করেন আইয়ুব ভক্তরা। কারণ জীবনের সব আয়োজন ফেলে দরজার ওপাশে চলে গেলেও দরজার এপাশে আইয়ুব বাচ্চু রেখে গেছেন কোটি ভক্তের অশ্রুসিক্ত চোখ।
এ জাতীয় আরো খবর..